সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির লাশ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দেশে আসবে। ঢাকায় তার জানাজার নামাজ হবে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ইনকিলাব মঞ্চ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়ে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে ওসমান হাদির মৃত্যু হয়।এ বিষয়ে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।
আরেক পোস্টে ইনকিলাব মঞ্চ বলেছে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট আগামীকাল (১৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় পৌঁছে দেবে। ঢাকায় অবতরণের সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিট।সিঙ্গাপুরে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রথম জানাযা দ্য আঙ্গুলিয়া মসজিদে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাযা অনুষ্ঠিত হবে শনিবার বাদ জোহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ওসমান হাদি পরে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গড়ে তুলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও নিয়মিত আমন্ত্রণ পেতে থাকেন তিনি। তার যুক্তিতর্কের অনেক ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাসখানেক আগে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। তিনি গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোনকল করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ ক্যাডাররা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে প্রাণনাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে পিছিয়ে যাবেন না তিনি।
১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় প্রচারে যাওয়া ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসী। রিকশায় থাকা হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখান থেকে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায় সরকার। চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেলেন হাদি।ওসমান হাদিকে গুলিতে জড়িত মূল সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ। তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।
তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাদের মধ্যে ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন।
প্রদা/ডিও