ইইউ থেকে আমদানিকৃত ঔষধে শুল্কের পরিমাণ ১৫ শতাংশ করল যুক্তরাষ্ট্র।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আমদানি করা ওষুধ কাঠ ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর আরোপিত শুল্ক সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরইমধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ। খবর এনবিসি নিউজ।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ইউরোপীয় ওষুধ শিল্পের ওপর ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত আর সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হতে পারে। তবে নতুন চুক্তিতে এই হার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি, ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিমান, বিমানযন্ত্রাংশ, জেনেরিক ওষুধের কাঁচামাল, রাসায়নিক উপাদান ও কিছু প্রাকৃতিক সম্পদের (যেমন কর্ক) ওপর শুল্ক পূর্বের মাত্রায় ফিরিয়ে আনা হবে।
চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। ২০২৮ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল ও পারমাণবিক জ্বালানি কিনতে ইইউ প্রায় ৭৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। এছাড়া অন্তত ৪০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন এআই চিপ কেনার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে তারা।
ঘোষণায় আরো বলা হয়েছে, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ২০২৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত খাতগুলোতে অতিরিক্ত ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ট্রাম্প একে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি হিসেবে দেখাচ্ছেন, তবে চুক্তিপত্রে স্পষ্ট বলা হয়েছে এগুলো কেবল প্রত্যাশা। ট্রাম্প সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘একটি উপহার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, কোনো দেশ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তাদের ওপর সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে।
তবে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, চুক্তির বহু দিক অস্পষ্ট ও ভঙ্গুর। ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক আইএনজি বলেছে, ‘ফলাফল আরো খারাপ হতে পারত, তবে চুক্তি দ্রুত ভেঙে পড়ার ঝুঁকি আছে।’
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অভ্যন্তরীণ বাজার ও ভোক্তা সুরক্ষা কমিটির চেয়ার আন্না কাভাজিনি বলেছেন, এ চুক্তি প্রমাণ করে ট্রাম্পের ‘ব্ল্যাকমেইল’ কার্যকর হচ্ছে, যা বৈশ্বিক নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করছে। তার ভাষায়, ‘এটি ইউরোপের জন্য খারাপ চুক্তি। এটি ইউরোপীয় রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপ করছে আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইউরোপের নির্ভরশীলতা বাড়াচ্ছে।’
প্রদা/ডিও