ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার–সিলেটসহ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের বাড়তি ভাড়া গতকাল শনিবার থেকে কার্যক্রর হয়েছে। রেলওয়ের বাণিজ্যিক ও পরিবহন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–কক্সবাজার, ঢাকা–সিলেট, চট্টগ্রাম–সিলেট, চট্টগ্রাম–জামালপুর ও ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ এই ছয় রুটে আসন ও রুটভেদে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে। সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা ভাড়া বেড়েছে ঢাকা–কক্সবাজার রুটে চলাচলরত কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি বার্থে। এই রুটে ভাড়া ২ হাজার ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৬ টাকা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ থেকে জানা গেছে, ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচল করা বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ারে টিকিটের দাম ৪৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪৯৯ টাকা। স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ৮৮ টাকা বেড়ে ৯৪৩ টাকা, প্রথম বার্থ ১০৮ টাকা বেড়ে হয়েছে ১১৮৩ টাকা, এসি আসনের ভাড়া ১০২৫ থেকে বেড়ে ১১৩৩ টাকা এবং এসি বার্থ ১৫৯০ থেকে ১৫৬ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৭৪৬ টাকা।
এই পথের অপর আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ৭৭৭ টাকা থেকে ৮০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮৫৭ টাকা। এসি আসনের ভাড়া ৯৮ টাকা বেড়ে ১০৩০ টাকা, এসি বার্থ ১৪৪৮ টাকা থেকে ১৪৩ টাকা বেড়ে ১৫৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা–কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্নিগ্ধা ১৩২২ থেকে ১২৭ টাকা বেড়ে ১৪৪৯ টাকা, এসি আসনের ভাড়া ১৫৯০ টাকার সাথে ১৫০ টাকা বেড়ে ১৭৪০ টাকা, এসি বার্থের ভাড়া ২২৬ টাকা বেড়ে ২৬৫৬ টাকা, শোভন চেয়ারের ভাড়া ৬৪ টাকা বেড়ে ৭৫৯ টাকা হয়েছে।
চট্টগ্রাম–সিলেট পথে শোভন চেয়ার ২৫ টাকা বেড়ে ৪৭৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৮৫৭ থেকে ৫২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৯০৯ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ৫৭ টাকা বেড়ে ১০৮৭ টাকা, এসি বার্থের ভাড়া ৮৭ টাকা বেড়ে ১৬৭৮ টাকা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন বলেন, ২০ ডিসেম্বর থেকে পন্টেজ চার্জ বাড়ানো হয়েছে। সে হিসেবে বাড়ানো হয়েছে ট্রেনের ভাড়া।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সব রুটে নয়, নির্দিষ্ট কিছু রুটে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ বছরে রেলওয়ে অন্তত পাঁচবার ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছে। এবার সরাসরি টিকিটের দাম না বাড়িয়ে পন্টেজ চার্জ বা মাশুল আরোপের মাধ্যমে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
রেল ভবনের পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–কক্সবাজার, ঢাকা–সিলেট, চট্টগ্রাম–সিলেট, চট্টগ্রাম–জামালপুর ও ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ রুটের ১১টি সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে। রেলওয়ের ভাষায়, রেলপথে কোনো সেতু বা সমজাতীয় স্থাপনা থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটাতে যে অতিরিক্ত মাশুল নেওয়া হয় সেটাই পন্টেজ চার্জ। নিয়ম অনুযায়ী, ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতুকে আড়াই কিলোমিটার পথ হিসেবে গণনা করা হয়। ফলে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর দূরত্ব ধরা হয় ২৫ কিলোমিটার। এতে কাগজে–কলমে রুটের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং সেই অনুপাতে ভাড়াও বাড়ে।
প্রদা/ডিও







