দীর্ঘদিন পর দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংক। এতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সবকয়টি মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর একের পর এক ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত।
ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অন্য খাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮০টির। এছাড়া ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪২টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫১টির দাম কমেছে এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ১৩টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪টির দাম কমেছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৮ কোটি ৬০ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। ২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সোনালী পেপার, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লাভেলো আইসক্রিম এবং সিভিও পেট্রোকেমিক্যালস।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও