তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শনের পর সাড়ে পাঁচ বছর কেটে গেলেও এখনো ত্রুটি সংস্কারের অর্ধেক কাজ শেষ হয়নি। নানাভাবে চেষ্টা করেও সংস্কারকাজে গতি আনতে পারেনি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)।
সে জন্য কচ্ছপ গতিতে চলা সংস্কারকাজ শেষ করতে আবার পুরোনো কৌশল নিয়েছে সংস্থাটি। অর্থাৎ সংস্কারকাজ শেষ না করলে কারখানার লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না। তিন বছর আগেই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছিল, তাতে অবশ্য কাজ হয়নি
ডিআইএফইর মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ চলতি মাসের গোড়ার দিকে নির্দেশ দেন যে তৈরি পোশাক কারখানার সংস্কারকাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ থাকবে। নির্দেশনা ভঙ্গ করে কোনো কারখানার লাইসেন্স নবায়ন করলে অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক চেষ্টা করেও প্রায় ৭০০ পোশাক কারখানার ত্রুটি সংস্কারের কাজ শেষ করানো যাচ্ছে না। অথচ নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়েই এসব কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। প্রভাবশালী মালিকপক্ষের বাধার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গত মাসে নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যুর পর ডিআইএফইর পরিদর্শন কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা হয়। মূলত নিজেদের দায় এড়াতেই সংস্কারকাজ শেষ না করা পোশাক কারখানার লাইসেন্স নবায়ন না করার পুরোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আরসিসির অধীনের কারখানাগুলোর অধিকাংশ ঠিকায় বা সাবকন্ট্রাটিংয়ের মাধ্যমে পোশাক উৎপাদন করে। সরাসরি কাজ করলেও তারা মূলত নন-কমপ্লায়েন্ট ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারী। ফলে লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রাখলেও আদতে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। কারখানাগুলো ঠিকই তাদের উৎপাদনকাজ চালিয়ে যাবে। তার চেয়ে লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে সংস্কারকাজ শেষ করার শর্ত আরোপ করা যেতে পারে।অবশ্য বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘যেসব কারখানায় ঝুঁকি রয়েছে, সেগুলোকে ছাড় দেওয়ার পক্ষপাতী নই আমরা। এই ধরনের কারখানায় যেন ক্রেতারা ক্রয়াদেশ দিতে না পারেন, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে যেসব কারখানা ঝুঁকিমুক্ত, তাদের ছাড় দিতে হবে।’ তিনি মনে করেন, সংস্কারকাজ শেষ করা নিয়ে সহজ পথে হেঁটেছে ডিআইএফই।