চট্টগ্রামের পটিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানা হেফাজতে থেকেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় তার ফেসবুক পোস্ট, ছবি ও ভিডিও কলের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
গ্রেফতার হওয়া ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিম (২১)। তিনি পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে পরিচিত।
সূত্র জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর (বুধবার) রাত আনুমানিক ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশের হেফাজতে থেকেও শোয়াইবের ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায়ও তাকে নিয়মিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও ছবি পোস্ট করতে দেখা যায়। এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন—‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন। জয় বাংলা।’
পরবর্তীতে থানা পুলিশের অফিস কক্ষে হাতকড়া পরা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন—‘এই দিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’
এছাড়াও ডিউটিরত অবস্থায় ঘুমন্ত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়—‘ঘুম ভালোবাসিরে…জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশের দায়িত্ব ও শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সবশেষে আরেকটি ছবিতে তাকে ছাত্রলীগ নেতা ও বন্ধু মহিমের সঙ্গে ভিডিও কলে যোগাযোগ করতে দেখা যায়। ওই ছবির ক্যাপশনে বন্ধু মহিম লেখেন—‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপোষহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
পুলিশ হেফাজতে থাকা একজন গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি কীভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে পারেন—এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও বিস্ময় দেখা দিয়েছে। অনেকে বিষয়টিকে পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলা হিসেবে দেখছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নোমান আহমদ এবং পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তারা।
প্রদা/ডিও







