রাজধানীর আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবনের বাথরুম থেকে ইসরাত জাহান তুষ্টি (২১) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর মরদেহ...
Read moreকরোনা প্রতিরোধে চীনের সিনোভ্যাক লাইফ সায়েন্সেস লিমিটেডের তৈরি করা টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। দেশে এ টিকার...
Read more২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের অনেক জায়গায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কথা বলা হলেও সামাজিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সানেমের পর্যবেক্ষণ জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এমন অভিমত ব্যক্ত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা। ড. সেলিম রায়হান তার বাজেট প্রতিক্রিয়ার আলোচনায় বলেন, টাকার অংকে বাজেট বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে আমাদের বাজেট খুব সামান্যই বেড়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ বাজেট বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে জিডিপির অনুপাতে ঘোষিত বাজেটের আকার যথেষ্ট নয়। আবার যে বাজেট ঘোষণা হয়েছে, সেটিও বাস্তবায়ন হয় না। বছরের শেষে সংশোধিত বাজেটের আকার এক দফা কমে। পরে আবার প্রকৃত বাজেট নথিতে দেখা যায় এ বাজেট আরেক দফা কমে যায়। আবার এটিও মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন খাতে সরকারি খরচ মানেই বাস্তবায়ন নয়। অনেক সময় বিভিন্ন অনিয়মের কারণে খরচ করা আর বাস্তবায়ন করার মধ্যে বড় ফারাক থাকে। সংবাদ সম্মেলনে সানেম বলছে, করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা, দারিদ্র্য, বৈষম্য ইত্যাদি সামাজিক বিষয় পুনরুদ্ধারের কথা বাজেটে আরো সুস্পষ্ট ও গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করার প্রয়োজন ছিল। মহামারীর কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে ‘এডহকভাবে’। সামগ্রিক কোনো পরিকল্পনার অধীনে নয়।
Read moreএকাদশ জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ...
Read moreমহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে দেশে দেশে নেয়া হয়েছে কৃচ্ছ্র সাধনের নানা উদ্যোগ। গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সুরক্ষা ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়গুলো। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় গত বছরই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা কমিয়ে আনার ঘোষণা দেয় কাতার ও ভিয়েতনাম। পরবর্তী সময়ে অন্য অনেক দেশই সরকারি ব্যয়ের খাত সংকুচিত করার পথে হেঁটেছে। যদিও চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে গত অর্থবছরের মতো এবারো সরকারি কর্মীর বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। মহামারীর অনেক আগে থেকেই এ ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেতন-ভাতায় সরকারের ব্যয় ছিল ২৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছর নাগাদ ৯২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে এক দশকে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির হার দাঁড়াচ্ছে ২২১ শতাংশের বেশিতে। বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর উপস্থাপিত তথ্যে দেখা যায়, আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এ ব্যয় মোট পরিচালন বাজেটের ১৯ শতাংশ। আর পরিচালন বাজেটের ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে পেনশন পরিশোধে। সে হিসেবে বেতন-ভাতা ও পেনশন পরিশোধেই পরিচালন বাজেটের ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় হবে। ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪’ শীর্ষক বাজেট প্রকাশনার তথ্যমতে, বেতন-ভাতা খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সরকারের ব্যয় ছিল ৪০ হাজার ৫০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় বাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত হিসাবে এ খাতে সরকারের ব্যয় ৬৫ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। আর আগামী অর্থবছরে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় ধরা হয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বাবদ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে সরকারের ব্যয় ৮১ হাজার ৪৩০ কোটি ও পরের অর্থবছরে তা ৯২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ বেড়েই চলছে। সরকার নানাভাবে আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভর হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটি ঘটছে। এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে অর্থনীতি দুদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে আমলাদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে গিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে বড় অংকের বেতন-ভাতা নিয়েও বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলারা চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। চলতি অর্থবছরেও বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলারা অদক্ষতা, সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনার অনেক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। এত টাকা বেতন-ভাতা নেয়ার পাশাপাশি অনিয়ম-দুর্নীতিও থেমে নেই। আমলারা দিন দিন আরো শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠছেন, যা সুশাসনের অন্তরায়। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরে জিডিপির বিপরীতে ঘাটতির প্রাক্কলিত হার দাঁড়াচ্ছে ৬ দশমিক ২ শতাংশে। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ হার ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণের জন্য আগামী অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপরই নির্ভর করতে চাইছে বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার কর আয় বাড়ানোর লক্ষ্য ধরা হয়েছে প্রস্তাবে। সাবেক সচিব ফাওজুল কবির খান বণিক বার্তাকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পারফরম্যান্সের সঙ্গে যুক্ত নয়। এটি অনেকটা উপহার হিসেবে দেয়া হয়। এর সঙ্গে সেবা দেয়ার বিষয়টি যুক্ত না হওয়ায় তাদের মধ্যে সেবা প্রদানের মানসিকতা গড়ে উঠছে না। আগে সরকারি চাকরিকে আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করা হতো। পারফরম্যান্স ভালো করার জন্য প্রতিযোগিতা চলত। এখন প্রতিযোগিতা করতে হয় না, এমনিতেই বছর শেষে বেতন-ভাতা নির্ধারিত নিয়মে বেড়ে যাচ্ছে। এটি সঠিক প্রক্রিয়া নয়। নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোটাই আন্তর্জাতিক রীতি। তারা এখন এসিআর নিয়ে মাথা ঘামান না। কারণ এটি আর এখন কোনো কাজেই ব্যবহার হয় না।
Read moreজুন, জুলাই এবং আগস্টে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ চীনা টিকা আসবে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ সোমবার সচিবালয়ে...
Read moreফাইন্যান্স কোম্পানি আইন ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সভা পরবর্তি ব্রিফিং এ তথ্য জানিয়েছেন শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার...
Read moreকভিড-১৯ অতিমারীর প্রথম ধাক্কায় অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব বিপর্যয় নেমে আসে। মানুষের জীবন ও জীবিকা বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। অধিকাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছে। ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম নতুন করে দারিদ্র্য বেড়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সঙিন দশা আরো স্পষ্ট হয়েছে। শিক্ষা খাত পিছিয়ে পড়ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সবার জন্য না থাকায় অধিকাংশ মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, বৃদ্ধ, শিশু, নারীসহ সমাজের দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্যবর্তী শ্রেণীগুলো ভাঙনের শিকার হয়েছে। প্রথম ধাক্কাই তারা সামলাতে পারেনি। সঞ্চয়, আয় যা ছিল সব ফুরিয়েছে। খানাগুলোর দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা অবশিষ্ট নেই। মূলত যেকোনো অভিঘাতে অধিকাংশ মানুষের ঝুঁকি প্রশমনের সক্ষমতা অনেক কম বলেই দারিদ্র্য বাড়ছে। সরকার অর্থনীতির সংকোচন রোধে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। তবে প্রতিটি ব্যক্তি হাতে ও কারবারে নগদ অর্থ আশানুরূপ পৌঁছতে পারেনি। রফতানিমুখী ও বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রণোদনার বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নের অগ্রগতি দ্রুত হয়েছে। কিন্তু কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত এবং কৃষি খাতে খুবই মন্থর। অথচ এসব খাতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নিয়োজিত। ফলে অধিকাংশ মানুষ বঞ্চিত থেকে গেছে। বিপরীতে সম্পদ কিছু মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এ কারণে অর্থনীতি বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে। পুনরুদ্ধার নীতি-কাঠামোর অনুমিতি নির্ধারণে কিছু ঘাটতি দৃশ্যমান। ফলে অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত পুনরুদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না। এখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে কভিড-১৯-এর প্রথম ও দ্বিতীয় ধাক্কায় অর্থনীতির সংকোচনের স্বরূপ উন্মোচনের পাশাপাশি প্রচলিত নীতি-কাঠামোর সীমাবদ্ধতাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তারই আলোকে একটি সমতাভিত্তিক ও টেকসই পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধার নীতি-কাঠামোর রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। গতানুগতিক নীতি-কাঠামো থেকে বেরোতে হবে বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ অতিমারীর অভিঘাত থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রসারণশীল নীতি-কাঠামো নেয়া হয়েছে। রাজস্ব ও মুদ্রানীতির মাধ্যমে ব্যক্তি হাতে ও কারবারে সরাসরি নগদ অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো গড়ে মোট দেশজ উৎপাদনের ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ প্রণোদনা অর্থ সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশে লক্ষ করা গেছে, কভিড-১৯ অভিঘাতের মধ্যেও সরকার গতানুগতিক নীতি-কাঠামো থেকে বের হতে পারেনি। সবাই যখন সম্প্রসারণশীল রাজস্ব নীতির আশ্রয় নিচ্ছে, বাংলাদেশে তখন রাজস্ব ব্যয় আরো কমেছে। সরকার মনে করেছে অর্থনীতি খুব দ্রুতই অতিমারীর রেশ কাটিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে যাবে। কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্র আঘাত আসতে পারে এবং তাতে অর্থনীতি আরো বেশি সংকুচিত হতে পারে এ রকম অনুমান করা হয়নি। ধরে নেয়া হয়েছিল এক বছরের মধ্যেই অতিমারী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। তাই স্বল্পমেয়াদি নীতিমালাই গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও টেকসই পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন ছিল মধ্যমেয়াদি নীতিমালা ও সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা। ঘোষিত প্রণোদনা বিশেষ পরিস্থিতিতে অ্যাডহক ভিত্তিতে মুদ্রানীতির মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। বেশির ভাগ ঋণভিত্তিক। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ঘাটতির কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খানা ও কারবারগুলোতে অর্থ যায়নি। ফলে তাদের দুর্ভোগ কমেনি এবং অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যের কাতারে চলে যাচ্ছে। বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধার নীতি-কৌশলের বৈষম্যমূলক প্রভাবের কারণে উল্লম্ব দিকে আর করোনার মতো মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি অভিঘাতে অনুভূমিক দিকে সামাজিক পার্থক্য বাড়ছে। পিছিয়ে পড়া, দুর্বল, ঝুঁকিপ্রবণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী, মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ক্রমেই প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। সম্পদ ওপরের দিকের কিছু ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, মহামারীর মধ্যেই কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন। এক দশকে ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির হারে শীর্ষে বাংলাদেশ। বিপরীতক্রমে দারিদ্র্য হার ও বৈষম্য বাড়ছে এবং মেরুকরণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। প্রণোদনা প্যাকেজের বেশির ভাগই গিয়েছে রফতানিমুখী আর বৃহৎ কিছু শিল্পের হাতে। অন্যদিকে অনানুষ্ঠানিক খাত, কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত (সিএমএসএমই) আর কৃষি খাত উপেক্ষিত রয়ে গেছে। ফলে বৈষম্য বাড়ছে। পুনরুদ্ধারের গতিপথ ইংরেজি কে অক্ষরের চেহারা ধারণ করছে। অর্থাৎ একদিকে সম্পদ কিছু মানুষের হাতে যাচ্ছে, অন্যদিকে অধিকাংশ মানুষের আয় কমছে। মধ্যবর্তী শ্রেণীগুলোর একটি অংশ ক্রমেই প্রান্তিক হয়ে পড়ছে এবং দরিদ্রের কাতারে চলে যাচ্ছে। আরেকটি অংশ রাষ্ট্রক্ষমতার (অপ)ব্যবহার করে বা কাছাকাছি থেকে যেকোনো প্রক্রিয়ায় অর্থোপার্জনে নিয়োজিত এবং উচ্চবিত্তের কাতারে যাচ্ছে। অন্য ক্ষুদ্র অংশটি কোনো রকমে টিকে আছে। এ ভাঙনের কারণে সামাজিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাদের বলিষ্ঠ অবদান ও নেতৃত্ব ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় তারা নীতি-কৌশল প্রণয়নে তেমন প্রভাব রাখতে পারছে না। রাজস্ব ব্যয় বিগত বছরের তুলনায় কম ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পরিমাণে বাড়লেও প্রধান খাতগুলোতে বিগত বাজেটের তুলনায় কম বরাদ্দ পেয়েছে। বিগত বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও বাজেটে জিডিপির তুলনায় এডিপি বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূাচতে বরাদ্দ কমেছে ৫ শতাংশ। এর সঙ্গে রয়েছে সরকারের অতি নিম্ন বাজেট বাস্তবায়নের হার। ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে পেরেছে মাত্র ৪৪ শতাংশ। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার মাত্র ২৯ শতাংশ। বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৮৫ শতাংশ অর্জন করতে হলে সরকারকে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে, যা অসম্ভব। বোঝাই যাচ্ছে অর্থ ছিল পর্যাপ্তই কিন্তু তা ব্যবহার করা যায়নি। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির একটি বড় অংশই এসেছে সরকারি ব্যয় থেকে। কিন্তু করোনাকালের অভিঘাত মোকাবেলায় যেখানে সরকারি ব্যয় কয়েক গুণ বাড়ানোর কথা সেখানে তা আগের তুলনায় কমেছে। ফলে অর্থনীতি আরো সংকুচিত হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো অভিবাসী এবং কৃষি খাতের অপেক্ষাকৃত ভালো উৎপাদন অর্থনীতির চাকাকে এখনো ধরে রেখেছে। এ দুই উেসর অবস্থা খারাপ হলে অর্থনীতি আরো বেশি সংকোচনের শিকার হতো। অত্যধিক তারল্য সত্ত্বেও ঋণপ্রবাহ সামান্য সরকার ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে অর্থের সরবরাহ বাড়িয়েছিল। করোনার মধ্যেই দেশে অধিক পরিমাণ অভিবাসী আয় এসেছে। বিদেশী সাহায্য পেয়েছে। ফলে তারল্য বেড়েছে। কিন্তু অধিক তারল্য থাকা সত্ত্বেও ঋণপ্রবাহ বাড়ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ ঘোষণা করলেও অর্জন হয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ। বড় প্রতিষ্ঠাণ ঋণ পেলেও নানা বাধার কারণে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে অর্থ থাকা সত্ত্বেও নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার কমেছে। অন্যদিকে রাজস্ব ব্যয়ও কমেছে। এ কারণে অর্থনীতির সংকোচন থেকে আশানুরূপ উত্তরণ হচ্ছে না। প্রণোদনা অর্থ বণ্টনে বৈষম্য সব অর্থনৈতিক খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও খুব অল্পসংখ্যক খাতই সঠিকভাবে তা পেয়েছে। সরকার মোট ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে ৭৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। সর্বমোট বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ। এ প্রণোদনার ৮০ দশমিক ৭ শতাংশই ঋণভিত্তিক। মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ রাজস্ব প্রণোদনা। রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের পুরোটাই তারা পেয়েছে। অথচ কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণে বরাদ্দকৃত ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ২৪৩ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকির ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে সরবরাহ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। এসএমই খাতের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম ২ হাজার কোটি টাকা, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা ১৫০টি উপজেলায় সম্প্রসারণে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণে ৯৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত এক টাকাও সরবরাহ করা হয়নি। অন্যদিকে তৈরি পোশাক ও চামড়া খাতের শ্রমিকদের সহায়তার জন্য বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে সরবরাহ হয়েছে মাত্র ৬ কোটি টাকা। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৫০০ কোটির টাকার মধ্যে সরবরাহ হয়েছে মাত্র ৫৭০ কোটি টাকা। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছতে পারেনি। ফলে তাদের দুর্ভোগ কমানো যায়নি। বরং দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আটকে যাচ্ছে। নতুন দারিদ্র্য ও বৈষম্য বৃদ্ধি অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করা প্রায় ২১ দশমিক ৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী আয় হ্রাস ও বেকারত্বের শিকার হয়েছে। অন্য খাতের শ্রমিকরা একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। বিভিন্ন হিসাব বলছে, কভিডের কারণে দারিদ্র্য বেড়ে ৪০ শতাংশের ওপরে উঠেছে। উন্নয়ন অন্বেষণের হিসাব বলছে, লকডাউন পরিস্থিতি আরো বাড়তে থাকলে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭ শতাংশে দাঁড়াবে। একই সঙ্গে আয়বৈষম্য বেড়েছে সমাজের ওপর আর নিচতলার মানুষের। সিপিডির হিসাব বলছে, জনসংখ্যার সর্বনিম্ন আয়ের ১০ শতাংশ মানুষের আয়ের অংশ কভিডের আগে ছিল ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কভিডের কারণে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশে। নতুন দারিদ্র্য ও বৈষম্য বৃদ্ধির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনও হুমকিতে পড়বে। স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তিগত খরচ অত্যধিক কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য খাতের মাত্র ২৭ শতাংশ খরচ আসে বাজেট থেকে আর বাকি টাকা আসে জনগণের পকেট থেকে। ২০১৬ সালের খানা জরিপ অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবায় উচ্চমাত্রার ব্যক্তিগত খরচ ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ মানুষকে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে এবং ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দেয়। বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সেবা এবং নিবিড় পরিচর্যার খরচ সরকারি হাসপাতালের চেয়ে যথাক্রমে ৮৯ ও ২৫ শতাংশ বেশি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে একজন কভিড রোগীর পেছনে গড়ে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ১১৯ টাকা। বেসরকারি হাসপাতালে প্রতি রোগীর পেছনে খরচ হয় ২ লাখ ২২ হাজার ৭৪ টাকা। সরকারি হাসপাতালের প্রায় দ্বিগুণ। সরকারি হাসপাতালে ধারণক্ষমতা কম থাকার কারণে অনেককেই বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালের অধিক খরচ বহন করতে হয়। এভাবে দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরো ঘনীভূত হচ্ছে। অন্যদিকে সময়মতো টিকা প্রাপ্তির বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ টিকা গ্রহণ করেছে। ভারতে এ হার ১২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং নেপালে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। শিক্ষা জীবন অপচয়ে উৎপাদনশীলতা হ্রাস দীর্ঘ ছুটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে ক্লাস নেয়া শুরু করে। বাংলাদেশের শুধু ১৩ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটের আওতায় আছে। ইউনিসেফের মতে, ৩ কোটি ৬৮ লাখ শিক্ষার্থী সব অনলাইন ক্লাস ও নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনের ৫ দশমিক ৫ মাস বা প্রায় অর্ধেক বছর হারাচ্ছে। এ পরিমাণ শিক্ষা জীবন অপচয়ের কারণে দীর্ঘমেয়াদে একজন শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে প্রায় ১৩ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির ক্ষতি হবে জিডিপির প্রায় ৩৩ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক বলছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে ১১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হবে। আর পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনলাইন শিক্ষায় বঞ্চনার অন্যতম কারণ দুর্বল নেটওয়ার্ক ও উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট খরচ। বাংলাদেশে ১ গিগাবাইট ইন্টারনেটের মূল্য প্রায় ১ ডলার। ভারতে এর মূল্য মাত্র দশমিক ২৬ ডলার। ইন্টারনেট খরচ নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন হলেও তা করা হচ্ছে না। আবার পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা করতে না পারায় এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার সম্ভাবনা কম।...
Read moreপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আমান কটন ফাইবার্স লিমিটেড চলতি ২০২০-২১ হিসাববছরের নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য সময়ে...
Read moreপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চলতি ২০২০-২১ হিসাব বছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ)অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য সময়ে...
Read moreCopyright © 2018-2025: Dainik Orthoniti II Design By : F.A.CREATIVE FIRM LTD
Copyright © 2018-2025: Dainik Orthoniti II Design By : F.A.CREATIVE FIRM LTD