যেসব বিদেশি তরুণ-তরুণী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং বা অঙ্কশাস্ত্রে চীন বা কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা উচ্চতর ডিগ্রি পেয়েছেন, তারাই এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা বা গবেষণা করছেন এমন পেশাজীবীরাও এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীদের জন্য একটাই প্রয়োজনীয় বিষয়, ‘কে-ভিসা’র জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে।
এই ‘কে ভিসা’র আসলে চীনের ‘আর-ভিসা’রই বিস্তারিত ব্যবস্থা। চীন ২০১৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত প্রতিভাবানদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ‘আর-ভিসা’ চালু করেছিল।
সিলিকন ভ্যালি থেকে চীনে?
যুক্তরাষ্ট্র যখন ‘এইচ-১বি’ ভিসার ফি প্রচুর বাড়িয়ে দিয়েছে, তখন ভারতীয়রাই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ ভারতীয় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদেরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ‘এইচ-১বি’ ভিসা দেওয়া হতো।
সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, যতজনকে ‘এইচ-১বি’ ভিসা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ভারতীয়রা হলেন ৭১ শতাংশ এবং এরপরেই ১১.৭ শতাংশ ভিসা পেয়েছেন চীনের নাগরিকরা।
আমেরিকার প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন কঠোর নিয়ম চালু হওয়ার পর ভারতীয় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের পছন্দের নতুন ঠিকানা হয়ে উঠতে পারে চীন।
চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বড়সড় বিনিয়োগ করেছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রেও তারা যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তি হয়ে উঠতে চাইছে। কৃত্রিম উপগ্রহ সংক্রান্ত প্রযুক্তি, মহাকাশ অভিযান, ধাতু-বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্র এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত প্রযুক্তিতে তারা বড় বিনিয়োগ করেছে।
এর সুবিধা নিতে পারেন ভারতীয় প্রকৌশলীরা। অন্যদিকে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিবিদদের কাজে লাগাতে পারবে চীন। অন্য একটি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে যে, সিলিকন ভ্যালিতে কর্মরত প্রকৌশলীরা চীনের কথা ভাবতে পারেন।
চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের এরই মধ্যে যে ১২ ধরনের ভিসা চালু আছে, সেগুলো থেকে ‘কে-ভিসা’ আলাদা। এই ভিসা নিয়ে চীনে যাওয়া ব্যক্তিকে দেশে প্রবেশ করা, সময়সীমা আর সেখানে বসবাস করার ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা দেওয়া হবে।
এই ভিসা নিয়ে চীনে যারা যাবেন, তারা শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে পারবেন। একই সঙ্গে সেদেশে ব্যবসা ও শিল্প-স্থাপনও করতে পারবেন তারা। তবে এই ভিসার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো যে, চীনের কোনো নিয়োগকর্তা বা প্রতিষ্ঠান থেকে আমন্ত্রণপত্র না পেলেও আবেদন করা যাবে। ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়াও সুবিধাজনক করা হচ্ছে।
সদ্য স্নাতক, গবেষক ও শিল্পদ্যোগীদের জন্য ‘কে-ভিসা’ বেশি সুবিধাজনক হবে। এই ভিসা পেতে গেলে চীনে কোনো চাকরির অফার না থাকলেও হবে। ওই দেশে গিয়ে কেউ চাকরি খুঁজে নিতে পারেন।
প্রদা/ডিও