প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চলে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে এবং বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে ১৬ হাজার ৫০২টি ডেঙ্গু আক্রান্তের ঘটনা ও ১৭ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। এই সংখ্যা ২০১৬ সালের পর সর্বোচ্চ। ফিজি, সামোয়া ও টোঙ্গা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে।
প্যাসিফিক কমিউনিটি এর উপ-মহাপরিচালক ডা. পাউলা বিবিলি বলেন, পূর্বে ডেঙ্গুর প্রকোপ মৌসুমি ছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন সংক্রমণের সময় দীর্ঘতর হচ্ছে এবং কিছু অঞ্চলে সারা বছরই ডেঙ্গুর ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে।
ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। জ্বর, মাথা ব্যথা, চর্মরোগসহ মারাত্মক ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। উষ্ণ তাপমাত্রা, অতিবৃষ্টি এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধি এই মশার বংশবৃদ্ধির আদর্শ পরিবেশ তৈরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের রোগতত্ত্ববিদ ডা. জোয়েল কফম্যান বলেন, ডেঙ্গু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটতে থাকা প্রথম স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম উদাহরণ।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত মশার ডিম ফোটার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে, আবার অতিবৃষ্টি ও খরা—উভয়ই মশার বিস্তার বাড়িয়ে দিতে পারে। শুষ্কতা সংক্রমণ কমাবে বলে মনে হলেও, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ আরও বাড়ছে।
রোগতত্ত্ববিদ ডা. ববি রেইনার বলছেন, বর্তমান নজরদারি ব্যবস্থা ডেঙ্গু মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিক্রিয়া আসে দেরিতে এবং তা সঠিক সময়ে বা যথাযথভাবে কার্যকর হয় না।
মশা নিয়ন্ত্রণে লার্ভানাশক প্রয়োগ, স্প্রে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলোর অনেকটাই প্রতিক্রিয়াধর্মী ও সময়মতো প্রয়োগ না হওয়ায় কার্যকারিতা কম।