কক্সবাজারের চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর আলোচিত উচিতার বিল মৌজায় বন্য হাতির অভয়ারণ্য ধ্বংসসহ পাহাড় ও গাছ কেটে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয় জিএলবি নামক ইটভাটা। এই ইটভাটায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এই অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। একইসঙ্গে ইটভাটার মূল চুলাটিও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না অবৈধ এই ইটভাটাটি।
গতকাল ১লা মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত পরিচালিত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদা পারভীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) শেখ মো. নাজমুল হুদা, পরিদর্শক মাহবুবুল আলম এবং পুলিশ, বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, ফাঁসিয়াখালী বনবিটের সংরক্ষিত বনে বন্য হাতির অভয়ারণ্য ধ্বংস করে অবৈধভাবে গড়ে তুলেন এই ইটভাটা চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। ইতোপূর্বেও এই ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান এবং জেল-জরিমানা করেও বন্ধ করতে পারেনি অবৈধ কর্মকাণ্ড। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এই ইটভাটা পরিচালনা করে আসছেন গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, একযুগেরও বেশি সময় ধরে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা গতকালের অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান , ” সংরক্ষিত বনের ভেতর অবৈধভাবে নির্মিত এই ইটভাটাটি পরিচালিত হচ্ছিল সনাতন পদ্ধতিতে। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের যত ধারা রয়েছে সবগুলোই অমান্য করা হয়েছে ভাটা পরিচালনার ক্ষেত্রে। অবৈধ এই ইটভাটার কার্যক্রম যাতে ভবিষ্যতে আর পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য ভাটার ম্যানেজারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” পাহাড় সাবাড় করার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা জানান, ”সেটি বনবিভাগ দেখবে।”
এই বিষয়ে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ”বিটের অধীন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের উচিতারবিল মৌজায় অবৈধ ইটভাটার পাশের পাহাড় সাবাড়ের বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”