বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ তারুণ্যের খনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস–২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমাদের সুযোগের কোনো অভাব নেই। আজ যদি পাঁচ লাখ লোক জাপানে পাঠাতে চান, পাঁচ লাখ লোক আজই পাঠানো যাবে। এরই মধ্যে বহু দালাল বলছে যে তোমাকে জাপান পাঠাচ্ছি। আমি তোমাকে কাগজপত্র দিয়ে দেবো। তুমি জাপানি ভাষাতে এক্সপার্ট, জাপানি ভাষার সার্টিফিকেট সেটাও দিয়ে দেব। এজন্য জাপান ঠিক করেছে- জাপানি ভাষায় পরীক্ষাটা তারা নেবে, যাতে আমাদের কাগজের ওপর বিশ্বাস করতে না হয়। এই হলো আমাদের অবস্থা। আমরা এ রকম হলাম কেন? এই বাংলাদেশের মানুষ প্রথমবার বিদেশ যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
ঢাকা: বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ তারুণ্যের খনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস–২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্র দালাল বেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার জন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালাল মুক্ত করতে না পারলে উন্নতি সম্ভব না। পৃথিবীতে তারুণ্যের অভাব, আমরা তারুণ্যের খনি। এটা সোনার চেয়েও দামি। সারা পৃথিবীকে আমাদের কাছে আসতে হবেই, এতো তরুণ জনশক্তি আর কোথাও নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সুযোগের কোনো অভাব নেই। আজ যদি পাঁচ লাখ লোক জাপানে পাঠাতে চান, পাঁচ লাখ লোক আজই পাঠানো যাবে। এরই মধ্যে বহু দালাল বলছে যে তোমাকে জাপান পাঠাচ্ছি। আমি তোমাকে কাগজপত্র দিয়ে দেবো। তুমি জাপানি ভাষাতে এক্সপার্ট, জাপানি ভাষার সার্টিফিকেট সেটাও দিয়ে দেব। এজন্য জাপান ঠিক করেছে- জাপানি ভাষায় পরীক্ষাটা তারা নেবে, যাতে আমাদের কাগজের ওপর বিশ্বাস করতে না হয়। এই হলো আমাদের অবস্থা। আমরা এ রকম হলাম কেন? এই বাংলাদেশের মানুষ প্রথমবার বিদেশ যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে তারুণ্যের অভাব আর আমরা হলাম তারুণ্যের খনি। এটা আমাদের মাথায় ঢুকছে না, এটা সোনার খনির থেকেও যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর চেয়ে তরুণ জনসংখ্যা কোথায় পাবে? সারা দুনিয়াকে আসতে হবে এখানে। তৈরি থাকলে যে কোনো জায়গায় যেতে চান তারা। সাধ্য সাধনা করে তাদের নিয়ে যাবে। এখন অনুরোধ আছে পোল্যান্ডে ইস্ট, ইউরোপের কান্ট্রিতে। প্রথম প্রস্তাব হলো আমাদের লোক দরকার, তোমাদের লোক দাও। এটা ক্রমে বাড়বে, কমবে না। ওদের তরুণ কমবে, আমাদের তরুণ বাড়বে। সারা দুনিয়া এখন বাংলাদেশের হাতে। যদি আমরা আমাদের এ রাস্তাগুলো তৈরি করতে পারি, দালালের কবল থেকে বাঁচতে পারি, নিয়ম শৃঙ্খলাগুলো রাখতে পারি। যেটুকু সাফল্যের কথা আমরা এখন আলোচনা করছি, এটা হলো সামান্য, ওপরের দিকে ভেতরে এখনো ঢুকিনি। সেজন্য জাতি হিসেবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা এমন একটা ভাগ্যবান জাতি, যেখানে অনন্য সোনার খনি। এ সোনার খনি থেকে যদি আমরা সোনা না আনি আমাদের কপালের কোনো পরিবর্তন হবে না। আমাদের এ সোনা ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার করার জন্য সারা দুনিয়া এক পায়ে খাড়া। আমরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করি। আশা করি, সেই প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তি পাবো। আমাদের তরুণরা সারা দুনিয়ার যে কোনো তরুণের চেয়ে কম না, শুধু সেই সুযোগটা তাদের দেওয়া।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ৮৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। এর মধ্যে শিল্পখাতে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের জন্য একজনকে, বৈধ পথে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ৭৫ জনকে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির জন্য ১০ জনকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
তিন ক্যাটাগরিতে সিআইপি সম্মাননা পাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে যথাক্রমে কল্লোল আহমেদ, মো. আবদুল করিম ও মো. মাহমুদুর রহমান খান প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের জন্য বীমা সুবিধা, চিকিৎসা সহায়তা, আর্থিক অনুদান, ক্ষতিপূরণ এবং মেধাবী সন্তানদের জন্য বৃত্তির চেক বিতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে ক্রোয়েশিয়াপ্রবাসী রাজু আহমেদ এবং সৌদি আরবফেরত প্রবাসী শাহনাজ আক্তার শানু তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা এবং দেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগও তুলে ধরা হয়।
প্রদা/ডিও







