দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও অনুভূত হয়েছে ভূমিকম্প। এতে ছড়ায় আতঙ্ক, ঘর ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসেন মানুষ, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় শোনা যায় উলুধ্বনি। এর স্থায়িত্ব ছিল ২৬ সেকেন্ড।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) মাত্রা দেখিয়েছে ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদীতে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, দুপুর ২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের কোথাও দুর্ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। জানা যায়নি ভবন হেলে পড়ার খবরও।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক শামীম হাসান জানান, ভূমিকম্পজনিত কারণে উৎপাদন বিঘ্নিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় সাময়িক বিঘ্ন ঘটেছে। বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট আগে থেকেই বন্ধ ছিল, ভূমিকম্পের পর আরেকটি ইউনিটও বন্ধ হয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে ৬ দশমিক ৯৯ মাত্রার ভূমিকম্পে নগরে ১২টি ভবন হেলে পড়েছিল। এর আগে ১৯৯৭ সালের ২১ নভেম্বর ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে নগরে পাঁচতলা ভবন ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এদিকে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে নগরে ৩ লাখ ৮২ হাজার ভবনের মধ্যে ২ লাখ ৬৭ হাজার ভবন কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’র (চউক) তথ্যমতে, বর্তমানে নগরে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১১টি ভবন আছে। একতলা ভবন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৫টি এবং দুই থেকে পাঁচতলা ভবন আছে ৯০ হাজার ৪৪৪টি। ৬ থেকে ১০তলা পর্যন্ত ভবন ১৩ হাজার ১৩৫টি। ১০তলার ওপরে ভবন আছে ৫২৭টি। নগরে এখন ২০তলার বেশি ভবন ১০টি। এত উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা হলেও অধিকাংশই মানেনি ইমারত বিধিমালা। সম্প্রতি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৯৪টি ভবন সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা নিতে চসিকে তালিকা পাঠায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে কর্তব্যরত একজন কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রাম নগরসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।