মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার পর তাকে ভারত থেকে ফেরাতে দিল্লিতে চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তবে চিঠি পাঠানো হয়েছে কি না, সেটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি সরকার। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলেও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কিংবা পররাষ্ট্র সচিব- কেউই মুখ খোলেননি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ভারত বা শেখ হাসিনা ইস্যুতে সব ধরনের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন। পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচ মাসে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকরা শেখ হাসিনাকে ফেরানো সংক্রান্ত চিঠির প্রসঙ্গ তোলেন।
এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এই সংবাদ সম্মেলন এবং সংবাদকর্মীদের সঙ্গে যে আলাপ চলছে, তা সম্পূর্ণই ভুটান সফর-সংক্রান্ত। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা করা অসৌজন্যমূলক হবে। আমি আশা করি আপনারা বিষয়টি বুঝবেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বও দ্বিপাক্ষিক সফরেই সীমাবদ্ধ রাখবেন।’
তার উত্তরে এক সাংবাদিক বলেন, এটি সফরের (ভুটান সফর) বাইরের বিষয় এবং আলাদা করে প্রশ্ন করা হচ্ছে। যেহেতু সচিব আঞ্চলিক প্রসঙ্গের কথা বলেছেন, প্রতিবেশী ভারতের বিষয়ও প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
জবাবে সচিব বলেন, ‘আঞ্চলিক বলতে আমরা সার্ক ও বিমসটেক সংক্রান্ত ইস্যু বুঝিয়েছি। আমরা আমাদের আলোচনার পরিধি সেখানেই সীমিত রাখতে চাই।’
পরে সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় ছাড়ার সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন এবং একই প্রশ্ন করেন- দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে কি না, আর বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে কেন। তবে উপদেষ্টা কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের দিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, চিঠিটি সেদিন রাতেই বা পরদিন সকালে ভারতকে পাঠানো হবে।
পরদিন তিনি জানান, সরকার যে চিঠি পাঠাবে তা প্রস্তুত হচ্ছে এবং নোট ভারবালের মাধ্যমে পাঠানো হবে। রায়ের কপি ভারতকে পাঠানো হবে না; বরং নোট ভারবালে রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। সে সময় অন্তর্বর্তী সরকার প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরানোর জন্য দিল্লিতে চিঠি পাঠায়। সেই চিঠির কোনো জবাব আসেনি এখনো।
প্রদা/ডিও







