তিনি আরও জানান, ইউক্রেন ‘অত্যন্ত শক্তিশালী ফরাসি রাডার’, আটটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য উন্নত অস্ত্রও পাবে।
এসব হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, যা কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করে। সর্বশেষ রাতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর বালাকলিয়ায় তিনজন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সের্হেই কুঝান বিবিসিকে বলেন, রাশিয়ানরা প্রতি মাসে ৬ হাজার গ্লাইড বোমা ব্যবহার করছে। ফরাসি এয়ার-টু-এয়ার সিস্টেম, যার পাল্লা ২০০ কিমি—এটি খুব দরকার, কারণ রাশিয়ার নিজস্ব সিস্টেমের পাল্লা ২৩৮ কিমি।
তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (আরইউএসআই) জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, এগুলো কতটা পরিবর্তন আনবে, তা নির্ভর করবে সরবরাহের সময়সূচি ও সঙ্গে কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হচ্ছে তার ওপর।
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক চুক্তি, বিশদ ক্রয়াদেশ নয়; তাই রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের গতিপথে বড় পরিবর্তন আসবে বলে কেউই আশা করছে না।
পাশ্চাত্যের সামরিক হার্ডওয়ার কার্যকর হয় তখনই, যখন যথাযথ প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিক ব্যবস্থা থাকে। জার্মানির তৈরি লিওপার্ড ২ ট্যাংক হোক বা মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান—সবকিছুর জন্যই প্রয়োজন প্রশিক্ষিত পাইলট, বড় প্রযুক্তি-টিম এবং বিপুল খুচরা যন্ত্রাংশ।
রাফালের ক্ষেত্রে আরও জটিলতা রয়েছে, এর ব্যয় বহন করবে কে? ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রান্স নিজস্ব বাজেট থেকে কিছু অর্থ দেবে, পাশাপাশি ইইউ যৌথ ঋণ-ব্যবস্থার দিকেও ঝুঁকবে।
ব্রাসেলসের ইউরোপীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন, ইউক্রেনের জন্য অর্থ ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে।
ইইউ আগামী দুই বছর ইউক্রেনের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে, কিন্তু জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো রুশ সম্পদ সামরিক সহায়তায় ব্যয় করা হবে কি না, এ নিয়ে ঐকমত্য নেই।
আন্তর্জাতিক আইনে এই প্রস্তাব বর্তমানে বৈধ নয় এবং যুদ্ধের পর রাশিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে—এ ভয়ে বহু দেশ আগ বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী ইতোমধ্যে ফরাসি মিরাজ যুদ্ধবিমান ও মার্কিন এফ-১৬ ব্যবহার করছে। এ ছাড়া সুইডেনের গ্রিপেন যুদ্ধবিমান সংগ্রহের প্রাথমিক সিদ্ধান্তও হয়েছে।
ফ্রান্স সফরের পর জেলেনস্কি স্পেনে যাবেন, আরও সামরিক ও আর্থিক সহায়তার জন্য।
এর আগে সপ্তাহান্তে তিনি গ্রিসের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ চুক্তি করেছেন। শীত মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বলকান হয়ে ইউক্রেনে প্রবাহিত হবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করেন।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০% ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং বিশাল ফ্রন্টলাইনে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে—যদিও ভয়াবহ যুদ্ধক্ষয় হচ্ছে বলে খবর রয়েছে।
প্রদা/ডিও







