খাদ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রাম্প প্রশাসনের আমদানি শুল্কনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
খাদ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রাম্প প্রশাসনের আমদানি শুল্কনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিশেষ করে কলা ও কফির মতো জনপ্রিয় ভোক্তাপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্কহারে বড় ধরনের কর্তন দেখা দিতে পারে বলে অভিমত তাদের। খবর এফটি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রায় ব্যয়ের ঊর্ধ্বমুখিতার জন্য বিগত জো বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করছেন ট্রাম্পঘনিষ্ঠ শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, এখনো এ সংকট লাখ লাখ মার্কিন নাগরিকের জীবনযাপনকে প্রভাবিত করছে। তা মোকাবেলায় চাপ বাড়ছে হোয়াইট হাউজের বর্তমান প্রশাসনের ওপর।
ট্রাম্প প্রশাসনের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কেভিন হাসেট। জেরোম পাওয়েলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগামী বছরে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার হিসেবে তাকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়োগ দিতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে কেভিন হাসেট জানান, ট্রাম্প প্রশাসন খাদ্যপণ্যের আমদানি শুল্কহার সমন্বয়ের মাধ্যমে দাম কমানোর চেষ্টা করতে পারে। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই জনপরিসরে শুল্কহারে পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমারও মনে হয়, এক্ষেত্রে আরো কিছু পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক বলে দাবি করলেও এ সময় কেভিন হাসেট স্বীকার করেন যে ট্রাম্পের আমলে খাদ্যপণ্যের দাম আরো বেড়েছে।
একই দিনে ফক্স বিজনেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে খাদ্যের দাম কমানোর লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে কফি, কলা ও অন্যান্য ফল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক হ্রাসও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, বিশ্বের কফির শীর্ষ ভোক্তাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে কফি আমদানি করা হয় প্রধানত ব্রাজিল থেকে। দেশটি থেকে পণ্য আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক ধার্যের পর যুক্তরাষ্ট্রে কফির দাম ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়। এছাড়া দেশটিতে কলাসহ বিভিন্ন ফল আমদানি করা হয় লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানের বিভিন্ন দেশ থেকে। এসব দেশের ওপরও পণ্য আমদানিতে উচ্চশুল্ক আরোপ করে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে এবং কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নির্বাচনে রিপাবলিকানদের বিপর্যয়কর ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে এমন ঘোষণা আসতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব নির্বাচনে ট্রাম্প-সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবির জন্য বিতর্কিত এ শুল্কনীতিকেই অনেকাংশে দায়ী করা হচ্ছে। শুল্কের কারণে ভোক্তাপণ্যের দাম বাড়ায় মার্কিন অনেক নাগরিকের জন্যই জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করেন। এতে দেশটিতে অনেক খাদ্যপণ্য আমদানিতে ব্যয় ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সেমিকন্ডাক্টর, ওষুধ ও বিরল খনিজের মতো কিছু খাতকে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের আওতা থেকে সাময়িক ছাড় দিয়ে রেখেছে। তবে ভবিষ্যতে এসব পণ্যকেও শুল্কের আওতায় আনার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আরোপিত শুল্কহার কমানোর জন্য বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমিত আকারে বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখনো প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপরই অন্তত ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করে রেখেছে।
প্রদা/ডিও







