মেধাবীদের বাংলাদেশ ব্যাংকে আকৃষ্ট করতে ও কর্মস্থলে ধরে রাখতে নবম ও দশম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য ফের চালু করা হয়েছে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট বা বোনাস সুবিধা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-২-এর পরিচালক নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অভ্যন্তরীণ সার্কুলারে এ তথ্য জানানো হয়। নির্দেশনাটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়, শিক্ষাজীবনে চারটি প্রথম শ্রেণি বা বিভাগে উত্তীর্ণ কর্মকর্তারা অতিরিক্ত তিনটি ইনক্রিমেন্ট (বোনাস) পাবেন। আর যাদের তিনটিতে প্রথম শ্রেণি বা বিভাগ থাকবে, তারা অতিরিক্ত দুটি ইনক্রিমেন্ট পাবেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে একটি নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট পান। এর সঙ্গে এ মেধাভিত্তিক বাড়তি ইনক্রিমেন্ট যোগ হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪৩৮তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নিয়োগের আগে অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতার উৎকর্ষতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তিনটি এবং বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে নৈপুণ্যের ওপর ভিত্তি করে আরও একটি ইনক্রিমেন্টসহ মোট সর্বোচ্চ চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। নিয়মিত ইনক্রিমেন্টসহ একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ পাঁচটি ইনক্রিমেন্ট উপভোগ করতে পারবেন।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ বা এর বেশি নাম্বার পাওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত একটি ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর এ ইনক্রিমেন্ট বকেয়াসহ পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, নবম ও দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার নিয়ম আগে থেকেই ছিল। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ তা বন্ধ করা হয়। ২০২৪ সালের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর পুনরায় এ প্রথা চালু হয় এবং এখন আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল এক অফিস আদেশে জানায়, প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ কর্মকর্তা চাকরি ছেড়েছেন। যাদের মধ্যে আছেন একজন উপ-পরিচালক, একজন অফিসার ও ৫৫ জন সহকারী পরিচালক।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এ ইনক্রিমেন্ট নীতিমালা মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ফিরে আসতে উৎসাহিত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জনবল ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
চাকরি ছেড়ে যাওয়া কর্মকর্তারা জানান, একসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছিল আকর্ষণীয়। তবে এখন সুবিধা-সুবিধা কমে আসায় অনেকে সুযোগ পেলেই অন্যত্র যোগ দিচ্ছেন। বিশেষ করে বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত অনেকেই আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে থেকে যেতেন, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে।
প্রদা/ডিও