তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সময়েই শুরু হয় বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ। কোভিড-১৯ মহামারিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অচল হয়ে পড়ে স্বাভাবিক জীবন ও অর্থনীতি। কিন্তু এই বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেই টিকা কেনাকে ঘিরে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
কোভিড টিকা আমদানিতে রাষ্ট্রের প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে—এমন অভিযোগের পর অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক আফরোজা হক খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি এই অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ। এতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস তৃতীয় পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। অভিযোগকারীরা দাবি করেন, সরকারি ক্রয়বিধি অনুসরণ না করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চুক্তি সম্পন্ন করা হয়, যা আইনের লঙ্ঘন।
সরকার সরাসরি সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা কিনলে কম দামে পাওয়া যেত, কিন্তু বেক্সিমকোর মাধ্যমে কেনায় প্রতি ডোজে ৭৭ টাকা অতিরিক্ত লাভ হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে। টিআইবির হিসাবে টিকা কেনা-বিতরণে খরচ হওয়ার কথা ছিল সর্বোচ্চ ১৮ হাজার কোটি টাকা, অথচ তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এ সিন্ডিকেটে তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউসের নামও রয়েছে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্না টিকা বিনামূল্যে পাওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ তা গ্রহণ করেনি—দুর্নীতির কারণেই এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগকারীদের দাবি। পরবর্তীতে ভারত রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশ বাধ্য হয় চীনের টিকা বেশি দামে কিনতে, যেখানে জাহিদ মালেকের দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব দিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে। অভিযোগকারীদের দাবি, একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে একচেটিয়া সুবিধা দিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
প্রদা/ডিও