চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনা আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। আগামী মাস থেকে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “চীনের অবিচারপূর্ণ বাণিজ্যনীতি ও প্রযুক্তি খাতে আগ্রাসী অবস্থানের জবাব এখন সময়মতো দেবে যুক্তরাষ্ট্র।”
তিনি আরও জানান, কিছু গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রেও নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপের পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন।
এর আগে একই প্ল্যাটফর্মে আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে চীন এখন বিশ্ববাজারকে ‘জিম্মি’ করার চেষ্টা করছে—যা তিনি ‘শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিলের হুমকিও দিয়েছেন। তবে পরে জানান, বৈঠকটি এখনো “চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়নি”, যদিও আলোচনাটি আদৌ হবে কি না, তা এখন অনিশ্চিত।
চীনের ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রযুক্তি ও গাড়ি খাতের শেয়ারমূল্যে বড় ধরনের পতন হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিরল খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব খনিজ গাড়ি, স্মার্টফোনসহ উচ্চপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে অপরিহার্য উপাদান।
চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর চীন তাদের বিরল খনিজ রপ্তানি কমিয়ে দেয়, যার প্রভাবে ফোর্ডসহ কয়েকটি মার্কিন কোম্পানিকে সাময়িকভাবে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়।
এ ছাড়া চীন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র-সম্পৃক্ত জাহাজ থেকে নতুন বন্দর ফি আদায়েরও ঘোষণা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে—ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে আরেক দফা বড় বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হতে পারে।
প্রদা/ডিও