কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর দেশের শেয়ারবাজারে ফের ঢালাও দরপতন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমছে লেনদেনের পরিমাণও।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। আর লেনদেনের শেষদিকে ভালো-মন্দ সব খাতের প্রতিষ্ঠানের ঢালাও দরপতন হয়। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকা নাম লেখানোর পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯২টির। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫৪টির দাম কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৬টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭২টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২টির দাম কমেছে এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৩ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬১১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৮১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রহিমা ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার, রবি, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং প্রগতি ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৭টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও