সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষদিকে ভালো-মন্দ সব খাতের প্রতিষ্ঠানের ঢালাও দরপতন হয়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮২টির। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৩৮টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭১টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৯টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৮৭ কোটি ৪৮ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩৬ কোটি ৮১ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী পেপারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার। ২৫ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার এবং লাভেলো আইসক্রিম।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৬টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও