চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৩৬ শতাংশে। আগের মাস আগস্টে এই হার ছিল ৮.২৯ শতাংশ, আর গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে তা ৯.৯২ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.৫৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত মাসিক ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে দেশের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই পণ্যের দাম বেড়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৬৪ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৭.৬ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৮.৯৮ শতাংশ, আগের মাসে ৮.৯ শতাংশ।
গ্রামাঞ্চলে ব্যয় বেশি, শহরে তুলনামূলক স্বস্তি
সিপিআই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গ্রামীণ এলাকায় তুলনামূলকভাবে পণ্য বেশি দামে কিনতে হয়েছে। সেপ্টেম্বরে গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৪৭ শতাংশ, আর শহরে ৮.২৮ শতাংশ।
মজুরি বৃদ্ধিও প্রায় স্থিতিশীল
জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের গড় মজুরি বেড়েছে ৮.০২ শতাংশ, যা আগস্টে ছিল ৮.১৫ শতাংশ। খাতভিত্তিকভাবে দেখা গেছে, কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে মজুরি যথাক্রমে ৮.১৩, ৭.৮৩ ও ৮.২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, আগের মাসের তুলনায় সামান্য কম।
লক্ষ্য পূরণ কঠিন
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই–ডিসেম্বর) মূল্যস্ফীতি ৬.৫০ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। তবে চলতি প্রবণতা দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।
বিবিএসের তথ্য নিয়ে আস্থার সংকট
তথ্য-উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএনএম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী বলেন, “বিবিএসের তথ্যের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা পুরোপুরি ফিরে আসেনি। নির্ভরযোগ্য তথ্য নিশ্চিত করতে কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া এখনই জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “বিবিএসকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনর্গঠন করা উচিত, যাতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তভাবে তারা দায়িত্ব পালন করতে পারে। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করে, সেভাবেই বিবিএসকেও স্বাধীন হতে হবে।”
প্রদা/ডিও