ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তোপের মুখে নিউজিল্যান্ড সরকার। বিরোধী দল, মানবাধিকার সংগঠন, ধর্মীয় নেতা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত ‘ইতিহাসের ভুল পাশে থাকা’ বলে স্বীকৃত হবে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্সসহ একাধিক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে এরই মধ্যে ১৫৭ দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছিল, নিউজিল্যান্ডও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেবে।
কয়েকদিন আগে অকল্যান্ডে কয়েক হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেয়। এমনকি ক্যাথলিক ও অ্যাংলিকান ধর্মযাজকেরা একজন মন্ত্রীর দপ্তরের সামনে নিজেদের শিকল দিয়ে বেঁধে প্রতিবাদও জানান।
কিন্তু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স ঘোষণা করেন, নিউজিল্যান্ড এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে না। তিনি বলেন, যুদ্ধ চলমান, গাজায় এখনো হামাসের তৎপরতা রয়েছে এবং এর ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কাঠামো স্পষ্ট নয়। এ পরিস্থিতিতে স্বীকৃতি দেওয়া শান্তি প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে।
তবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, বিশ্ব যখন সমাধানের পথে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তখন নিউজিল্যান্ড পিছিয়ে রয়েছে।
গ্রিন পার্টি এই সিদ্ধান্তকে দেশের ‘ভাবমূর্তির জন্য কলঙ্ক’ বলে উল্লেখ করেছে। লেবার পার্টি একে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি এবং ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া হতো।
তবে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন এসব সমালোচনার জবাবে বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিনপন্থি বা ইসরায়েলপন্থি নই, আমরা শান্তির পক্ষে। নিউজিল্যান্ড স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে পিটার্সের দপ্তর থেকে জানানো হয়, স্বীকৃতি দেওয়ার সময় নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সীমান্ত অবরোধের কারণে উপত্যকাটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রদা/ডিও