আমেরিকার নতুন শুল্ক নীতির কারণে চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক শিল্পে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রপ্তানিকারক ও কারখানা মালিকদের আশঙ্কা, শুল্ক বৃদ্ধি পেলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ক্রেতারা বিকল্প বাজারের দিকে ঝুঁকতে পারে, ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বড় বাজার
বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। চট্টগ্রামের বন্দর দিয়ে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ পোশাক রপ্তানি হয়। আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার প্রায় ২০ শতাংশ। শুল্ক বৃদ্ধি হলে পোশাকের দাম বেড়ে যাবে, এতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
উদ্যোক্তাদের শঙ্কা
চট্টগ্রামের শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতারা দাম বাড়াতে রাজি নয়। ফলে তারা অর্ডার কমিয়ে দিতে পারে অথবা কম শুল্কে সুবিধা পাওয়া দেশগুলোতে ঝুঁকতে পারে। ইতোমধ্যেই কয়েকজন আমদানিকারক অর্ডার পিছিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিকল্প বাজারের খোঁজ
ব্যবসায়ী নেতাদের মতে, ইউরোপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে প্রবেশের প্রচেষ্টা এখন আরও জোরদার করতে হবে। শুধু আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল থাকলে ভবিষ্যতে বড় ধাক্কা আসতে পারে। পাশাপাশি নতুন ডিজাইন, বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য ও টেকসই উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রপ্তানি আয়ে প্রভাব
বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই তৈরি পোশাক। চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভর করে এই রপ্তানির বড় অংশ সম্পন্ন হয়। তাই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে রপ্তানি কমে গেলে শুধু পোশাক খাত নয়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সরকারের ভূমিকা
রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে এ শুল্ক সমস্যার সমাধান খুঁজবে। একই সঙ্গে শিল্পের প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে প্রযুক্তি উন্নয়ন ও উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেও জোর দিতে হবে।
আমেরিকার শুল্ক বৃদ্ধির আতঙ্কে চট্টগ্রামের পোশাক শিল্প এখন অস্থির সময় পার করছে। উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এখনই বিকল্প বাজার গড়ে তোলা না গেলে বাংলাদেশি পোশাক খাত বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে।
প্রদা/ডিও