দেশের শেয়ারবাজারে ফের ঢালাও দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৩৯টির স্থান হয় দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমে ২১৯টির। আর ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
এমন দরপতনের পর রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষদিকে দরপতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ভালো-মন্দ সভা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ঢালাও দরপতন হয়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮২টির। আর ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৬০টির দাম কমেছে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৬টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৪টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৮৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৬৪ কোটি ১৮ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭০৮ কোটি ৯৪ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, এনভয় টেক্স টাইল, প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও