চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে অটোমেশন কার্যক্রম দুই দশকেও অগ্রগতি না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এখনো অর্ধেক স্বয়ংক্রিয় ও অর্ধেক ম্যানুয়াল অবস্থায় চলছে, যার ফলে ব্যবসায়ীরা নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) কার্যালয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার সম্পর্কিত এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব অভিযোগ তোলা হয়। আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও সংস্কার কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ। এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবীরের সঞ্চালনায় এতে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, “রাজস্ব আদায়ের বড় জায়গা হচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। ২০ বছর আগে যে পর্যায়ে অটোমেশন থেমে গেছে, সেটিই এখনো বহাল আছে। গার্মেন্টসের জন্য গ্রিন চ্যানেল চালুর কথা ছিল, সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি।”
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম অভিযোগ করে বলেন, “যদি পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন কার্যকর হয়, তবে ব্যবসায়ীদের সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু শুধু এনবিআরের অটোমেশন করলেই হবে না, সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে একই প্রক্রিয়ায় আনতে হবে।”
হাতেম তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে জানান, এক আমদানিকারকের পণ্য শুল্ক গোয়েন্দা আটকায়। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে চার-পাঁচ মাস পর পণ্য ছাড় হয়। এ সময় বিলম্ব ফি মওকুফের আদেশ বন্দরে পৌঁছাতে আরও ২১ দিন লেগেছে। “এ ধরনের বিলম্ব ব্যবসায়ীদের অযথা ক্ষতির মুখে ফেলে,” তিনি অভিযোগ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবীর বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এনবিআর সংস্কারের কথা বলছি, কখনো কখনো মনে হয়েছে এটি অরণ্যে রোদন। তবে বর্তমান সংস্কার কমিটি কার্যকরভাবে কাজ করছে। তাদের প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।”
হিসাববিদ ও এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া প্রস্তাব করেন, কর ও ভ্যাট সংগ্রহের জন্য একটি অভিন্ন কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা উচিত। এতে সরকারের ব্যয় কমবে এবং ব্যবসায়ীদের রাজস্ব পরিশোধ সহজ হবে।
প্রদা/ডিও