গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার প্রায় দ্বিগুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। বিপুল পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার কোটি টাকা। সেই সঙ্গে কমেছে মূল্য সূচক। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ শেয়ারবাজারে পতন হলো।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩৯টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির। আর ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এমন দরপতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ১৮ কোটি টাকা বা দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ১৪৬ কোটি টাকা এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
বাজার কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৩৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৯০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমলো ১৯৮ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৪ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪৩ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৩১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট।
আর ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৮ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৩৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এদিকে, গত সপ্তাহর ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭০১ কোটি ৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সামিন এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফারইস্ট নিটিং, টেকনো ড্রাগস, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, সোনালী পেপার, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং রবি।
প্রদা/ডিও