বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চুক্তি করার তীব্র আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। তিনি দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক-কালে তিনি এ প্রস্তাব দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তোবগে বলেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘গেলেপ্ফু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)’ বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে বরাদ্দকৃত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত হলে উভয় দেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দুই দেশেরই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সব সুযোগ অনুসন্ধান করা উচিত। বাংলাদেশ ও ভুটান উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী তোবগে ভুটানের ধর্মীয় পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা বৌদ্ধভিক্ষুরা তাদের দেশে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, ভুটান তাদের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের বিনিয়োগকে তারা স্বাগত জানাবে। একই সঙ্গে ভুটানে ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সহায়তা চান তিনি।
বৈঠকে দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে, তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ আয়োজিত রোহিঙ্গা ইস্যুবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশ নেবেন।
তিনি ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ‘ভাল হাতে’ রয়েছে। তোবগো প্রধান উপদেষ্টাকে নিজের ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করে তাকে ‘মাই প্রফেসর’ বলে সম্বোধন করেন।
এছাড়া ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস ভবনের নকশারও প্রশংসা করেন। হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর থিমে নির্মিত এ ভবনটি বাংলাদেশের আধুনিক কূটনীতির প্রতীক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের আগেই তিনি ঢাকা সফর করতে পারেন।
প্রদা/ডিও