বিশ্বের বড় রপ্তানিকারক দেশগুলো নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে ও বাজার সম্প্রসারণে একের পর এক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করছে। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, চীন, ফিলিপাইনসহ বহু দেশ এসব চুক্তির মাধ্যমে পণ্য বিনা শুল্কে বিশ্ববাজারে পাঠাচ্ছে। তুরস্কেরও রয়েছে ১৮ দেশের সঙ্গে পিটিএ।
কিন্তু বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে। এখন পর্যন্ত একমাত্র ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের পিটিএ হয়েছে। অথচ ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ ৪০টির বেশি দেশের সঙ্গে এফটিএ করেছে। এর ফলে দেশটি তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে গেলে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে। এলডিসি সুবিধা হারালে রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার এফটিএ ও অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (ইপিএ) করার উদ্যোগ নিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই জাপানের সঙ্গে প্রথম ইপিএ স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও চুক্তি করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রপ্তানি বাজার ধরে রাখা ও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, চীন, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া ও সৌদি আরবের সঙ্গেও এফটিএর পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, মানসিকতা তৈরি করতে হবে। ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়ার মতো দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা সক্ষমতার অভাবে পিছিয়ে পড়ছি।”
অর্থনীতিবিদদের মতে, সময়মতো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে না পারলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে পড়বে।
প্রদা/ডিও