বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ বিজনেস’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকটির আয়োজন করে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (ইউএসবিবিসি)।
মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগ আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা মেটলাইফ, শেভরন ও এক্সেলেরেটসহ শীর্ষ মার্কিন কোম্পানির প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, “বাংলাদেশে নতুন করে বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে। অবকাঠামো, জ্বালানি, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য শক্তির খাতে বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে এলে পারস্পরিকভাবে উভয় দেশেরই লাভ হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, তরুণ শ্রমশক্তি, প্রতিযোগিতামূলক উৎপাদন খরচ এবং দ্রুতগতিতে প্রসারিত ভোক্তা বাজার আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য তৈরি করেছে।
বৈঠকের পরিবেশ
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। বিশেষ করে জ্বালানি খাতে শেভরনের কার্যক্রম, বিমা খাতে মেটলাইফের বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি খাতে এক্সেলেরেটের আগ্রহ বৈঠকে গুরুত্ব পায়।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে জানতে চান। প্রধান উপদেষ্টা এ সময় জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি অর্থনীতি ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশকে এগিয়ে নেওয়া।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা
প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা উল্লেখ করে বলেন, “মার্কিন মাটিতে কর্মরত লাখো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করতে পারবে। তাদের উদ্যোগ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সেতুবন্ধন তৈরি করছে।”
রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী বাংলাদেশের ছয়জন রাজনৈতিক নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তারা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রাকে গতিশীল করতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইতিবাচক সাড়া
বৈঠকে অংশ নেওয়া মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের বাজারে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশেষত নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য খাতে নতুন সুযোগগুলো কাজে লাগাতে আগ্রহ দেখান তারা।
সমাপনী বার্তা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ শুধু দক্ষিণ এশিয়ার নয়, সমগ্র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য এক সম্ভাবনাময় বাজার। আমরা চাই আমেরিকান কোম্পানিগুলো এখানে বিনিয়োগ করে টেকসই উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির অংশীদার হোক।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে এবং যৌথ বিনিয়োগ উভয় দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।
প্রদা/ডিও