এশিয়া কাপের সুপার ফোরে আজ শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত, শ্রীলংকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে আজ শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত, শ্রীলংকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সমান ২ পয়েন্ট ঝুলিতে নিয়ে ফাইনালে চোখ রেখে আজ সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুটি দেশ। বিজয়ী দল ফাইনালের পথে বড় এক ধাপ এগিয়ে যাবে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।
গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোর মিলিয়ে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে অপরাজিত ভারত, যারা টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এর মধ্যে পাকিস্তানকে দুবার হারিয়েছে তারা। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানকেও হারিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ চার ম্যাচের তিনটি জিতেছে। হংকংকে হারিয়ে শুভসূচনা করার পর শ্রীলংকার কাছে হেরে যায় লিটন দাসের দল। এরপর আফগানিস্তানকে হারিয়ে তারা সুপার ফোরের টিকিট নিশ্চিত করে। এবার মুখোমুখি দুই দল।
ভারত-বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি লড়াইটা বড্ড একপেশে। এখন পর্যন্ত ১৭ বারের মোকাবেলায় ১৬টি জয় পেয়েছে তারা। বাংলাদেশ একমাত্র জয়টি পায় ২০১৯ সালে ভারত সফরে। সেবার দিল্লিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি। ভারত আগে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তোলার পর ১৯.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৫৪ রান তুলে ৭ উইকেটের দারুণ এক জয় পায় টাইগাররা। ৪৩ বলে ৬০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। তারা দুজনই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন।
মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসে ওই একমাত্র জয়ের পরই টানা দুই ম্যাচে হেরে সিরিজে ১-২-এ পরাজিত হয় বাংলাদেশ। এরপর আরো ছয়টি ম্যাচে ভারতের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দুটি ম্যাচ বিশ্বকাপে, একটি এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে ও তিনটি দুই জাতি সিরিজে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ৫ রানে হেরে যায় লাল-সবুজরা। গত বছর এন্টিগার নর্থ সাউন্ডে ৫০ রানে হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ গত বছর অক্টোবরে গোয়ালিয়র, দিল্লি ও হায়দরাবাদে হোম সিরিজে তিন ম্যাচেই বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় সূর্যকুমার যাদবের দল।
টি-টোয়েন্টিতে আজ ১৮তম বারের মতো মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। পরপর দুদিন দুই পরাশক্তির মুখোমুখি বাংলাদেশ। আগামীকাল একই মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে লিটন দাসের দল। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারায় বাংলাদেশ। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের ঝুলিতে সমান ২ পয়েন্ট।
প্রতিপক্ষ হিসেবে ফেভারিট ভারতকে অবশ্য ভয় পাচ্ছে না বাংলাদেশ। হেড কোচ ফিল সিমন্স বলেছেন, সব দলই ভারতকে হারাতে পারে, বাংলাদেশেরও সেই বিশ্বাস আছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ জিততে আসিনি। এসেছি চ্যাম্পিয়ন হতে।’
গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই জেতার পর সুপার ফোরেও পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। ভারতকে হারানো সম্ভব কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিমন্স বলেছেন, ‘সব দলেরই ভারতকে হারানোর সক্ষমতা আছে। খেলাটা হয় একটা নির্দিষ্ট দিনে। ভারত আগে কী করেছে, সেটা তখন কোনো কাজে আসে না। ম্যাচের দিন, ওই সাড়ে ৩ ঘণ্টায় কী হলো—সেটাই আসল। আমরা আমাদের সেরাটা খেলব, ভারতের ভুলের অপেক্ষায় থাকব। এভাবেই ম্যাচ জেতা যায়। এজন্য বিশ্বাস থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস আছে আমাদের। যদি সুযোগ আসে, কাজে লাগাতে হবে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেই ভারতের বিপক্ষে জেতা সম্ভব।’
মুখোমুখি রেকর্ডে ভারত অনেক এগিয়ে। এর পরও দুই দলের ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনার কমতি নেই। এ নিয়ে সিমন্স বললেন, ‘সব ম্যাচেই হাইপ থাকে। বিশেষ করে ভারত যেহেতু এক নম্বর টি-টোয়েন্টি দল, তাদের বিপক্ষে তো থাকবেই। আমরা এটা উপভোগ করি। প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করি। উপভোগ করো, সেরাটা দাও—ম্যাচের আগে আমাদের ভাবনা এটাই।’
এখন পর্যন্ত তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১২ ও ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে এবং ২০১৮ সালে আরব আমিরাতে ফাইনালে ওঠে টাইগাররা। ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে ও পরের দুবার ভারতের কাছে শিরোপার ম্যাচে হেরে যায় তারা। চতুর্থবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারবে কি লিটন দাসের দল?
প্রদা/ডিও