আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে টাইফয়েড ভ্যাকসিন দেবে সরকার। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের শিশুরা এ টিকা পাবে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ক্যাম্পেইন চলবে ১৮ কর্মদিবস পর্যন্ত। প্রথম ১০ দিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে টিকা নেবে। পরের ৮ দিন ইপিআইয়ের স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়া হবে।
ডা. আবু জাফর জানান, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সরকারের কাছে মজুত আছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ডোজ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৮৯ লাখ ২৭ হাজার শিশু টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছে। যারা এখনো করেনি তাদের দ্রুত নিবন্ধনের আহ্বান জানানো হয়।
নিবন্ধনের জন্য ভিজিট করতে হবে www.vexepi.gov.bd ওয়েবসাইটে, যেখানে প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর। নিবন্ধনের পর ডিজিটাল টিকা কার্ড পাওয়া যাবে, যা নিয়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্রহণ করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, “এই প্রথমবারের মতো সরকার এক ডোজ টায়ফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) বিনামূল্যে দেবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের সহযোগী হিসেবে আছে। এর সুরক্ষার সময়কাল পাঁচ বছর। বাজারে থাকা টিকার তুলনায় এর কার্যকারিতা অনেক বেশি।”
তিনি আরও বলেন, “টায়ফয়েড শুধুমাত্র জ্বর নয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে নানা জটিলতা হয়। অনেক সময় নাড়িভুঁড়ির ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়, দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি হয়; যেমন—পিত্তথলির প্রদাহ, লিভারের সমস্যা, এমনকি মস্তিষ্কেও প্রভাব পড়ে। শরীরের প্রায় সব অঙ্গেই এ রোগ জটিলতা তৈরি করতে পারে।”
গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ৮ হাজার মারা যায়। এদের ৬৮ শতাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু।
তিনি বলেন, “টিকা দেওয়ার দিন বাচ্চাদের ভালোভাবে খাইয়ে আনতে হবে। না খেয়ে আসলে টিকা নেওয়ার পর অনেক সময় অসুস্থ বোধ করতে পারে। অন্যান্য টিকার মতো হাত ব্যথা, লালচে ভাব, হালকা জ্বর বা মাথাব্যথা হতে পারে। তবে এর বাইরে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তারপরও আমরা শিশুদের কিছু সময় পর্যবেক্ষণে রাখব।”
তিনি আরও জানান, “ইসলামি ফাউন্ডেশন জানতে চেয়েছিল টিকাটি হালাল কিনা। আমরা নিশ্চিত করেছি, এটি হালাল। আমাদের উপমহাদেশের অন্যান্য দেশেও লাখ লাখ শিশুকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।”
প্রদা/ডিও