শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। দেশে বর্তমানে প্রতি তিনজন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী।
দীর্ঘদিন বেকার থাকা তরুণদের মধ্যেও স্নাতকদের হার বেশি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে যারা কাজ পাচ্ছেন না, তাদের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই সংখ্যায় শীর্ষে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। তাতে দেখা যায়, শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি এবং দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্বের প্রবণতাও বেশি। দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী হয় একেবারেই চাকরি পাচ্ছেন না, নয়তো পছন্দমতো কাজ পাচ্ছেন না।
অনেকে মেসে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন, একটি সম্মানজনক চাকরির অপেক্ষায় দিন গুনছেন। আবার মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত তরুণরা পরিবারের সঙ্গেই থাকেন, কিন্তু নানা টানাপোড়েন ও মানসিক চাপ তাদের অসহায় করে তুলছে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮৫ হাজারই স্নাতক ডিগ্রিধারী। সার্বিকভাবে গত কয়েক বছর ধরে বেকারের সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে।
এখন প্রতি তিনজন বেকারের একজনই উচ্চশিক্ষিত, যারা বিএ বা এমএ ডিগ্রি নিয়েও শোভন চাকরি পাচ্ছেন না। ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপে দেখা গিয়েছিল, তখন দেশে চার লাখের মতো স্নাতক বেকার ছিলেন। আট বছর পর এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় নয় লাখে, অর্থাৎ উচ্চশিক্ষিত বেকার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্ব সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে ১৭ শতাংশের বেশি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বেকার রয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিক পাস করা তরুণদের ক্ষেত্রে এ হার ৮ শতাংশের বেশি। আর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন তরুণদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্ব মাত্র ১ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বেকারের সংজ্ঞায় বলছে, কেউ সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে মজুরি পেলে তাকে বেকার ধরা হবে না। কেউ এক মাস ধরে কাজপ্রত্যাশী এবং সর্বশেষ এক সপ্তাহে যদি এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ না পান, তবেই তাকে বেকার হিসেবে গণ্য করা হবে।
তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে জীবনধারণ অসম্ভব। এ ছাড়া প্রায় এক কোটি মানুষ আছেন, যারা পছন্দসই কাজ পাচ্ছেন না। তাদের ছদ্মবেকার বলা হয়।
প্রদা/ডিও