চট্টগ্রাম শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান পথ চাক্তাই খাল। একসময় কর্ণফুলী নদী হয়ে এখানকার নৌবাণিজ্য ছড়িয়ে পড়ত কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা থেকে শুরু করে পাহাড়ি থানচি-রুমা পর্যন্ত। নৌকা-সাম্পানে বোঝাই হয়ে বন্দরের আমদানি করা পণ্য পৌঁছে যেত দেশের নানা প্রান্তে। তখন গ্রামের হাটবাজারে সরবরাহের প্রধান বাহন ছিল এই খালের নৌকাগুলো।
তবে সেই স্বর্ণযুগ এখন শুধু ইতিহাস। কয়েক শতাব্দী আগে গড়ে ওঠা চাক্তাই খালের রূপ-ব্যবহার আজ একেবারেই পাল্টে গেছে। স্লুইসগেট স্থাপনের ফলে খালে পানির প্রবাহ কমে এসেছে, বর্ষাতেও খাল ভরে থাকে ময়লায়। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও অসাধু কর্মকর্তাদের প্রভাবে খালের মোহনা ও কর্ণফুলী তীর দখল হয়ে গেছে হাজারো অবৈধ স্থাপনায়।
অথচ ২৫-৩০ বছর আগেও এখান দিয়ে নিয়মিত চলাচল করত পণ্যবাহী নৌযান। নৌকা সরাসরি খালের পাড়ে ভিড়ে মাল নামানো হতো দোকানের সামনে। তখন এক বস্তা মাল নামাতে খরচ হতো ১-২ টাকা। এখন ট্রাক ও ছোট ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করতে হয়, খরচ বেড়ে গেছে ২৫ টাকায়। তবুও ব্যবসায়ীদের মতে, পরিবহন এখন সহজ হয়েছে, যদিও খরচ বেশি।
কোথাও কোথাও পুরোনো খালের রূপ এখনও টিকে আছে। যেমন ভাঙাপুল ও নতুন চাক্তাই অংশে নৌযান চলাচল চোখে পড়ে। তবে বড় নৌকা আর আসে না, শহরের সিংহভাগ পণ্যই আসে ট্রাকে।
শতাব্দীপ্রাচীন এই খাল এখন শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি। নৌবাণিজ্যের সোনালি অতীত হারিয়ে চাক্তাই খাল পরিণত হয়েছে জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগের প্রতীকে।
প্রদা/ডিও
	    	
                                
		    





