এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ফের ঢালাও দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠোনের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেইসঙ্গে লেনদেন কমে এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পরেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। লেনদেনের শেষদিকে এ প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে ঢালাও দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭৫টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৩৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫৮টির দাম কমেছে এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৩টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬২টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৫টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১১টির দাম কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৩২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৭৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৪ আগস্টের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে রবি’র শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা একমি পেস্টিসাইড’র শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, শাহিনপুকুর সিরামিক, আইপিডিসি ফিন্যান্স, সিটি ব্যাংক, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং লাভেলো আইসক্রিম।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৫৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২০টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও