ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কারোপে ভারতের গহনা ও টেক্সটাইল রফতানিতে ঝুঁকি বাড়ছে, তবে ছাড় পাচ্ছে ঔষধ-স্মার্টফোন।
রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। ৭ আগস্ট ঘোষিত এই শুল্ক ২১ দিন পর কার্যকর হবে। ফলে কিছু ভারতীয় পণ্যে কর বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে।
তবে স্মার্টফোন, ওষুধ ও জ্বালানি খাত আপাতত শুল্কমুক্ত থাকছে। ভারতের রপ্তানির বড় অংশ গহনা, টেক্সটাইল ও কিছু অটো পার্টস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
অ্যাপলের সরবরাহকারী ফক্সকন, টাটা ইলেকট্রনিক্স, পেগাট্রন ও উইস্ট্রন ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ খাতের রফতানি ১১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অধিকাংশ আইফোন এখন ভারতে তৈরি হওয়ায় ট্রাম্পের শুল্কমুক্তির সিদ্ধান্ত অ্যাপলের জন্য বড় সুবিধা।
ড. রেড্ডিজ, জাইডাস, হেটেরো ল্যাবস, লুপিন, অরবিন্দো ফার্মা ও সান ফার্মাসিউটিক্যাল যুক্তরাষ্ট্রে জেনেরিক ওষুধের বড় রফতানিকারক। ২০২৪ সালে তারা ৩.৬ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ পাঠিয়েছে। আর চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি দাঁড়িয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন ডলার। সাশ্রয়ী চিকিৎসার জন্য এই খাতকে শুল্কমুক্ত রাখা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের গহনা ও রত্নখাতের সবচেয়ে বড় বাজার। গত বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি হয়েছে। যা মোট বৈশ্বিক বিক্রির ৩০ শতাংশ। ভারতের জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল সতর্ক করেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে কম শুল্ক থাকায় শিল্পটি কার্যত স্থবির হয়ে পড়তে পারে।
শাহি এক্সপোর্টস, ওয়েলস্পান, ইন্দো কাউন্ট, ট্রাইডেন্ট ও গোকুলদাস এক্সপোর্টস যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট, টার্গেট, কস্টকো ও গ্যাপকে সরবরাহ করে। ২০২৪ সালে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করেছে। নতুন শুল্কে এ খাতের কর হার বেড়ে ৫০ শতাংশ হবে। ঘোষণার পর থেকেই ক্রেতাদের আতঙ্কিত ফোন পাচ্ছেন রফতানিকারকেরা।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৬.৬ বিলিয়ন ডলারের অটো পার্টস রফতানি করেছে ভারত। এর মধ্যে গাড়ি ও ছোট ট্রাকের যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ শুল্ক থাকলেও বড় ট্রাক ও কৃষি যন্ত্রাংশে ৫০ শতাংশ কর বসবে। ভারত ফোর্জ, সোনা কমস্টার ও সমবর্তন মাদারসন শীর্ষ রফতানিকারক।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক ভারতের রফতানি আয়ের বড় অংশকে ঝুঁকিতে ফেললেও প্রযুক্তি, ওষুধ ও জ্বালানি খাত আপাতত স্বস্তিতে রয়েছে।
প্রদা/ডিও