হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে সংঘর্ষে আহত মাথার খুলির অংশবিশেষ হাসপাতালে খুলে রাখা চবি শিক্ষার্থী মামুন মিয়াকে নিয়ে ফটোসেশন হচ্ছে বলে অভিযোগ স্বজন ও সহপাঠীদের। মামুন বর্তমানে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ফটোসেশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানা গেছে, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আতিয়ার রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসাধীন মামুন মিয়াকে হাঁটানোর ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিগত কয়েকদিন থেকে আলোচনায়।
অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম, লিখব হয়তো। শুধু ইতিবাচক খবরটা শেয়ার করি। কিছুক্ষণ আগে পার্ক ভিউ হাসপাতালে এলাম, আহতদের দেখতে। আলহামদুলিল্লাহ, মামুন হাঁটছে, ছোট ছোট করে কথা বলছে। অপারেশনে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন জনাব ডা. ঈসমাইল আমাদের সাথে নিয়ে হাঁটালেন। কিছুটা হলেও স্বস্তি বোধ করলাম। সায়েমের অবস্থারও উন্নতি হচ্ছে। আইসিইউতে আছে তবে আজ দুপুরে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়েছে, ডা. বললেন সায়েম রেসপন্স করছে, আবারো আলহামদুলিল্লাহ।
সবশেষে বাকি অসুস্থদের জন্য অনেক অনেক দোয়া যেন দ্রুতই সবাই সুস্থ হয়ে ওঠে। এ বিশ্ববিদ্যালয় আমার দুই দশকেরও বেশি সময়ের বিচরণভূমি। যেখানেই থাকি এর ছোট বড় সব ঘটনা স্পর্শ করে, কোন কোনটি ভীষণ পোড়ায়। যাইহোক, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় স্টেইক তাদের পদচারণায় দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয় মুখরিত হোক সেটি ভীষণ প্রত্যাশা করি। সমাধান হোক সব অস্থিরতা, আক্রোশ-পাল্টা আক্রোশের অনুসঙ্গগুলোর।
পুনশ্চ: যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজেদের জমিদারি বলে দাবি করে, এরকম মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যে কারো জন্যই অসহ্যের। অগ্রহণযোগ্য। যে দলেরই হোক। বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয় জ্ঞান তৈরি, বিতরণ আর আলো ছড়াবার জন্য, জমিদারি চর্চার জন্য নয়। ’
মামুনের ভাই মাসুদ রানা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার ভাইটার মাথার খুলি এখনো জোড়া লাগানো হয়নি। তাকে বলা হচ্ছে সুস্থ। আমি কিছুক্ষণের জন্য রুমে ছিলাম না। পরে মামুনের বন্ধুরা আমাকে জানায়, তাকে হাঁটানো হয়েছে। ফটোসেশন-ভিডিও করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সে সুস্থ। অথচ সে কাউকে চিনতে পারছে না। এ অবস্থায় তাকে কীভাবে হাঁটানো হলো? আমি খুব কষ্ট পেয়েছি, মনটা ভেঙে গেছে। ’
গত ৩০ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ৩১ আগস্ট দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত। তাদের মধ্যে তিনজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয়। পরে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
প্রদা/ডিও