লোহিত সাগরের নিচে স্থাপন করা সাবমেরিন কেব্ল কেটে যাওয়ায়— এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এ ঘটনার পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এবিষয়ে জানা যায়।
ঘটনাটি ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের লোহিত সাগরে আক্রমণ অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। হুথিরা এ অভিযানের মাধ্যমে গাজায় হামাসবিরোধী যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। তবে সাবমেরিন কেব্লে আক্রমণের অভিযোগ এর আগেও অস্বীকার করেছে গোষ্ঠীটি।
সাবমেরিন কেব্ল বিশ্বের ইন্টারনেট অবকাঠামোর অন্যতম প্রধান ভরকেন্দ্র, যার সঙ্গে রয়েছে স্যাটেলাইট সংযোগ ও স্থলভিত্তিক কেব্ল নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত একাধিক অ্যাক্সেস পয়েন্ট ব্যবহার করে, যাতে কোনো একটি কেব্লের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে— ইন্টারনেট ট্রাফিক অন্য রুটে সরিয়ে নেওয়া যায়। এতে সম্পূর্ণ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হলেও ব্যবহারকারীরা ধীরগতির সংযোগ পান।
মাইক্রোসফট তাদের স্ট্যাটাস ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, লোহিত সাগরের ফাইবার কেব্ল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবহারকারীরা “অতিরিক্ত ল্যাটেন্সি” বা ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন। তবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, যেসব ট্রাফিক মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে যায় না, সেগুলো প্রভাবিত হয়নি।
ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, “লোহিত সাগরে একাধিক সাবমেরিন কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে।” এর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানও রয়েছে বলে এপি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া–মধ্যপ্রাচ্য–পশ্চিম ইউরোপ (সি-এমই-ডব্লিউই ৪) কেব্ল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে ভারতের টাটা কমিউনিকেশনস। আর ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ কেব্ল পরিচালনা করছে আলকাটেল-লুসেন্টের তত্ত্বাবধানে একটি কনসোর্টিয়াম। তবে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছেই এ ঘটনায় মন্তব্যের অনুরোধ করা হলেও— তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি তারা।
তবে পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (পিটিসিএল) গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, কেব্ল কাটা পড়ার ঘটনাটি তারা শনাক্ত করেছে।
সাবমেরিন কেব্ল কখনো জাহাজ থেকে নোঙর ফেললে কেটে যেতে পারে। আবার সেগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে হামলারও শিকার হতে পারে। এগুলো মেরামত করতেও দীর্ঘ সময় লাগে, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পৌঁছে বিশেষ জাহাজ ও কর্মী পাঠিয়ে কাজ করতে হয়।
কেব্ল কাটা যাওয়ার ঘটনাটি ঘটল এমন সময়ে, যখন ইয়েমেনের হুথিরা গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েল এরই মধ্যে ইয়েমেনে পাল্টা বিমান হামলা চালিয়েছে, যারমধ্যে একটি হামলায় হুথি আন্দোলনের শীর্ষ এক নেতা ও হুথি সরকারের ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী আহমেদ গালেব নাসের আল-রাহাভি নিহত হন।
প্রদা/ডিও