বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গতকাল প্রায় ২ শতাংশ কমেছে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গতকাল প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর আসন্ন বৈঠকে উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনাই এ দরপতনের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো এখন বাজারে নিজেদের অংশীদারত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে। খবর রয়টার্স।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল ১ ডলার ১৬ সেন্ট বা ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ব্যারেলপ্রতি ৬৭ ডলার ৯৮ সেন্টে। একই সময় জ্বালানি পণ্যটির মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ১ ডলার ২৮ সেন্ট বা ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলার ৩১ সেন্টে।
ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো রোববার একটি অনলাইন বৈঠকের মাধ্যমে অক্টোবরের জ্বালানি তেল উত্তোলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জোটটি আরো বেশি জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করবে। যদি এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তবে ওপেক প্লাস নির্ধারিত সময়ের এক বছরেরও বেশি আগে প্রতিদিন ১৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বা বৈশ্বিক চাহিদার ১ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তোলন বৃদ্ধির দ্বিতীয় ধাপ শুরু করবে। এর আগে তারা এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ২২ লাখ ব্যারেল উত্তোলন বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওপেক প্লাসের উত্তোলন বৃদ্ধির ঘোষণা বাজারে সরবরাহের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে, যা দাম কমার মূল কারণ। তবে কিছু বিশ্লেষক ও ওপেক প্লাসের সূত্র জানিয়েছে, জোটটি অক্টোবরের জন্য উত্তোলন বৃদ্ধি সাময়িকভাবে বন্ধও রাখতে পারে। এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
তবে গতকালের এ দরপতনের আগে জ্বালানি তেলের দাম এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। এর কারণ হিসেবে ইরাকি পণ্যের ছদ্মবেশে ইরানি জ্বালানি তেল পাচারের অভিযোগে একটি জাহাজ কোম্পানি ও এর বহরভুক্ত নৌযানগুলোর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিষেধাজ্ঞা জ্বালানি তেলের বাজারে সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করায় দাম বেড়েছিল।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও ওপেক প্লাসের উত্তোলন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি বাস্তবে পুরোপুরি কার্যকর হয়নি, তবু এসব ঘোষণা বাজারে প্রভাব ফেলছে। কারণ কিছু সদস্যদেশ অতীতের অতিরিক্ত উত্তোলনের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে এবং কিছু দেশের উৎপাদন সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এদিকে জ্বালানি তেলের দামের ওপর প্রভাব ফেলছে আরো কিছু বিপরীতমুখী কারণ। রয়টার্সের এক প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী, গত ২৯ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, ডিস্টিলেট ও গ্যাসোলিনের মজুদ প্রায় ৩৪ লাখ ব্যারেল কমেছে, যা সাধারণত দামকে ঊর্ধ্বমুখী করে তোলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বল অর্থনৈতিক তথ্যের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারছে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে দেশটির উৎপাদন খাত টানা ছয় মাস ধরে সংকুচিত হয়েছে। এটি তেলের চাহিদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা দামের ঊর্ধ্বগতিকে সীমিত করছে।
প্রদা/ডিও