সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের পর দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরপরও বাজারটিতে মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন লেনদেন শেষে ডিএসইতে দরপতনের পাল্লা ভারী হলেও লেনদেন শুরুর চিত্র ছিল ভিন্ন। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় মূল্যসূচক বাড়ে। লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
এতে আবারও সূচকের বড় উত্থানের প্রত্যাশা করতে থাকেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা হঠাৎ বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৪টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৮টির দাম কমেছে এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২২টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬০টির দাম কমেছে এবং একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৭টির দাম কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৮১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় এক হাজার ২৯৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার। ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি ব্যাংক, সোনালী পেপার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রবি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
প্রদা/ডিও