পরিমিত বৃষ্টিপাতের প্রভাবে জুলাইয়ে দেশে চা উৎপাদন বেড়েছে।
পরিমিত বৃষ্টিপাতের প্রভাবে জুলাইয়ে দেশে চা উৎপাদন বেড়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ সময় দেশের ১৭০টি চা বাগান ও উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্রায়তন চা চাষের জমিগুলোয় মোট ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের একই সময় যা ছিল ১ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার কেজি। অর্থাৎ জুলাইয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চা উৎপাদন বেড়েছে ২০ লাখ ৫৪ হাজার কেজি।
বাংলাদেশ চা বোর্ড আরো জানায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি-জুলাই পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছরের একই সময় তা কিছুটা বেড়ে ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৮০ হাজার কেজিতে পৌঁছেছে।
জুন থেকে দেশে চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম শুরু হয়। খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি চা বোর্ড ন্যূনতম নিলামমূল্য সংশোধন করে আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়েছে। দাম লাভজনক হওয়ায় বাড়তি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত দেশের প্রধান নিলাম কেন্দ্র চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক চা নিলামে বিক্রির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল ৩৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৮৫ কেজি চা। ২০২৪ সালের একই নিলামে প্রস্তাব করা হয়েছিল ৩৮ লাখ ২২ হাজার ৪৮৩ কেজি চা।
এদিকে উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে নিলামেও চায়ের সরবরাহ বাড়িয়েছেন বাগান মালিকরা। আজ অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম নিলামে বিক্রির জন্য ৩৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৫৮ কেজি চা প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি আগের বছরের একই নিলাম থেকে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯১ কেজি বেশি।
নিলামে সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি চায়ের দামও ভালো পাচ্ছে বাগানগুলো। ১৫তম চট্টগ্রাম নিলামে পণ্যটির গড় দাম ছিল কেজিপ্রতি ২৪৫ দশমিক ৫৮ টাকা। এ দামে ৭৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ চা কিনে নেয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। ১৬তম নিলামে চায়ের কেজিপ্রতি গড়মূল্য আরো বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪৬ দশমিক ৬৬ টাকায়। সর্বশেষ নিলামে প্রস্তাবিত চায়ের মধ্যে ৭০ দশমিক ৭৩ শতাংশ চা বিক্রি হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ন্যূনতম গড়মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে আগের তুলনায় লাভে চা বিক্রি করছেন বাগান মালিকরা। ২০২৩-২৪ নিলামবর্ষে প্রতি কেজি চায়ের গড়মূল্য ছিল ২০০ টাকা। ২০২৪-২৫ নিলামবর্ষে গড়মূল্য কিছুটা বেড়ে ২০৩ টাকায় উন্নীত হয়। বর্তমানে প্রতি কেজি ২৪০ টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে। চায়ের বার্ষিক গড় দাম আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
জানতে চাইলে ন্যাশনাল টি ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অঞ্জব দেব বর্মণ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নিলামে চায়ের ভালো দাম পাচ্ছেন বাগান মালিকরা। এ কারণে জুলাই থেকে নিলামে চা সরবরাহ বাড়িয়েছেন তারা। কয়েক মাস আগেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের মধ্যে চা উৎপাদন আশানুরূপ ছিল না। এখন মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন বেড়েছে। ফলে নিলামেও সরবরাহ বেড়েছে।’
প্রদা/ডিও