চীন থেকে দুষ্প্রাপ্য খনিজ চুম্বক রফতানি জুলাইয়ে ছয় মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
চীন থেকে দুষ্প্রাপ্য খনিজ চুম্বক রফতানি জুলাইয়ে ছয় মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি), জেট ইঞ্জিন ও উচ্চপ্রযুক্তির জন্য অপরিহার্য এ খনিজের বাণিজ্যপ্রবাহে মাস কয়েক আগে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বেইজিং। এতে রফতানি দ্রুত কমে আসে। এখন বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর সরবরাহ বেড়েছে, যা রফতানি আগের স্তরে ফিরে আসার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।
বিশ্বের বৃহত্তম দুষ্প্রাপ্য খনিজ চুম্বক সরবরাহকারী চীন। জুনের তুলনায় গত মাসে দেশটি থেকে এ ধাতুপণ্যের রফতানি প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৫৭৭ টনে পৌঁছেছে, যা চলতি বছরের জানুয়ারি পর একক মাস হিসাবে সর্বোচ্চ রফতানি। গতকাল চীনের শুল্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া রফতানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, জুলাইয়ে রফতানির এ পরিমাণ বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা গত বছরের একই মাসে রফতানি হওয়া ৫ হাজার ২৭৮ টন দুষ্প্রাপ্য খনিজের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে চীনের একাধিক চুক্তির পর দুষ্প্রাপ্য খনিজ খাতে রফতানির গতি ধারাবাহিকভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। গত এপ্রিলে বেইজিং খনিজ রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে বিশ্বজুড়ে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোয় উদ্বেগ দেখা যায়। মূলত মার্কিন শুল্ক আরোপের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ওই নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিল।
এপ্রিল ও মে মাসে চীন থেকে দুষ্প্রাপ্য খনিজ রফতানি তীব্রভাবে কমে যায়। ওই সময় রফতানি লাইসেন্স অনুমোদনের দীর্ঘ প্রক্রিয়া বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করে। চীনের বাইরে কিছু গাড়ি নির্মাতা দুষ্প্রাপ্য খনিজের ঘাটতির কারণে উৎপাদন স্থগিত করতে বাধ্য হয়।
জুলাইয়ে দুষ্প্রাপ্য খনিজ চুম্বকের সর্বোচ্চ আমদানিকারকের অবস্থান ধরে রেখেছে জার্মানি, যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১১৬ টন, যা আগের মাসের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি আগের মাসের তুলনায় ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৬১৯ টনে পৌঁছেছে, যা ২০২৪ সালের জুলাইয়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) চীনের দুষ্প্রাপ্য খনিজ চুম্বক রফতানি সম্মিলিতভাবে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৮৯৭ টন। এ সময় বার্ষিক রফতানি হ্রাসের হারও সংকুচিত হয়েছে। বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় রফতানি কমে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে জুলাইয়ে রফতানি বাড়ায় তা সংকুচিত হয়ে ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বিবাদে দরকষাকষির কৌশল হিসেবে দুষ্প্রাপ্য খনিজকে ব্যবহার করছে চীন। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের দুষ্প্রাপ্য খনিজ নিজেদের কবজায় রাখতে তৎপরতা বাড়িয়েছে বেইজিং।