গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৮৮৫ জনই শিশু।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় শিশুদের জন্য আর কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। ইসরায়েলের অবরোধে খাদ্য ও ওষুধের সংকট তীব্র হওয়ায় ক্ষুধা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন লাখো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। কিন্তু ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে এসব আশ্রয়কেন্দ্রও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, জাতিসংঘের পতাকার নিচে আশ্রয় নিলেও সেগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে।
ইউনিসেফের তথ্য উদ্ধৃত করে সংস্থাটি জানিয়েছে, গত পাঁচ মাসে—ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা শুরুর পর থেকে—প্রতি মাসে গড়ে ৫৪০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘের সতর্কবার্তার মধ্যেই মঙ্গলবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আটজন নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত জিএইচএফের খাদ্য বিতরণকেন্দ্রের কাছে।
গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। দেইর আল-বালাহর একটি তাঁবুতে হামলায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা সিটিতে আক্রমণ জোরদার করছে। জয়তুন এলাকায় বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। দক্ষিণ গাজায় বাড়িঘর উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পূর্বের তুফফাহ এলাকায় ভারী গোলাবর্ষণ চালানো হয়েছে।
পরিকল্পনায় আরও রয়েছে গাজা থেকে আংশিক ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার (বর্তমানে যার ৭৫ শতাংশ দখলে) এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি। যদিও ইসরায়েলের সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বোমা ও গুলির পাশাপাশি ক্ষুধা ও অপুষ্টিতেও মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজন মারা গেছেন। জুনের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত ১৫৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১১২ জন শিশু অপুষ্টি ও অনাহারে প্রাণ হারিয়েছে।
প্রদা/ডিও