চলতি মাস থেকে পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রবর্তিত নতুন শুল্কনীতি।
চলতি মাস থেকে পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রবর্তিত নতুন শুল্কনীতি। এতে আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে মার্কিনদের বাড়তি খরচ গুনতে হবে। এ কারণে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা পর্যায়ে ভোক্তা ব্যয় বেড়েছে।
এপির প্রতিবেদন অনুসারে, গত মাসে মার্কিন ভোক্তারা বিশেষত অটোমোবাইল খাতে খরচ বাড়িয়েছেন। তবে শুল্কনীতি দেশটির চাকরির বাজারের ওপর চাপ এবং কিছু ক্ষেত্রে পণ্যের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি করেছে।
ব্যাপক শুল্ক আরোপের অনিশ্চয়তা মার্কিনদের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য পণ্য আগেভাগেই কিনতে উদ্বুদ্ধ করছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।
মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা খাতে বিক্রি আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে জুনেও ভোক্তা ব্যয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিল। জুনের খুচরা বিক্রির তথ্য দশমিক ৬ থেকে সংশোধন করে দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে উন্নীত করা হয়েছে। জুলাইয়ের এ প্রবৃদ্ধি অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এপ্রিল ও মে মাসের টানা দুই মাস খুচরা পর্যায়ে ব্যয় হ্রাসের পর পরবর্তী দুই মাসে খরচ বাড়িয়েছে মার্কিন ক্রেতারা।
প্রতিবেদন অনুসারে, অটোমোবাইল খাত বাদ দিলে জুলাইয়ে মার্কিন খুচরা বিক্রি বেড়েছে দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময় গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। আমদানীকৃত গাড়ি ও যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের আগে মার্চ-এপ্রিলেও মার্কিনরা কেনাকাটা বাড়িয়েছিলেন। পরে এ বাবদ ব্যয় কমলেও এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্যান্থিয়ন ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান মার্কিন অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েল টমবস।
তথ্যানুযায়ী, পোশাক ও অনলাইন বিক্রেতাদের বিক্রি বেড়েছে। গৃহস্থালি আসবাবপত্র ও গৃহসজ্জার দোকানগুলোয় ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে ইলেকট্রনিকসের বিক্রি কমেছে। অন্যদিকে রেস্তোরাঁয় খরচ কমেছে। কারণ খরচ বাঁচাতে অনেক ভোক্তা এখন বাড়িতে রান্না করছেন।
গ্যাস, গাড়ি ও রেস্তোরাঁর মতো খাত বাদ দিলে জুলাইয়ে মাসিক ভিত্তিতে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। এ পরিসংখ্যান ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যানালিসিসের ভোক্তা ব্যয়ের হিসাবকে প্রভাবিত করে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ভোক্তারা এখনো কিছু অপ্রয়োজনীয় পণ্যে ব্যয় করছেন।
আরএসএম ইউএসের অর্থনীতিবিদ টুয়ান গুয়েন উল্লেখ করেছেন, এত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও শুল্ক পরিস্থিতির মাঝে জুলাইয়ের এ প্রবৃদ্ধি শুধু ভোক্তাদের ক্রয় প্রবণতার কারণে হয়েছে বলা কঠিন। এ প্রবৃদ্ধির বড় একটি অংশ সম্ভবত আমদানি পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির ফল।
তিনি আরো বলেন, ‘আগস্টের শুল্ক সময়সীমার আগে ভোক্তারা ব্যয় বাড়িয়েছেন এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। এছাড়া অ্যামাজন প্রাইম ডেসহ ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী বিক্রেতাদের বিশেষ ছাড় এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। আসবাবপত্র বিক্রির তীব্র বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় যে ভোক্তারা শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন।’