দেশের ইতিহাসে জ্বালানি তেল পরিবহনে নতুন দিগন্ত খুলছে শনিবার (১৬ আগস্ট)। পরিবেশবান্ধব, ঝুঁকিমুক্ত, পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২৪২ কিলোমিটার পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২৬০-২৮০ মেট্রিক টন ডিজেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপোতে।
এসব তেল পরিবহনে শতাধিক কোস্টাল ট্যাংকারে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন ১২ ঘণ্টায় জ্বালানি তেল নারায়ণগঞ্জের ডিপোতে পৌঁছাবে।
পতেঙ্গার ডেসপাস টার্মিনালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন নামের যুগান্তকারী এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান।
উদ্বোধনের পর নদীপথে অয়েল ট্যাংকারের পরিবর্তে পাইপলাইনেই নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা ডিপোতে জ্বালানি তেল পাঠানো হবে।
সব কিছু স্বয়ংক্রিয় স্ক্রিনে মনিটরিং করা হয়েছে পাইপলাইনে তেল পাঠাতে কোনো জটিলতা হয়নি। এ লাইনে ঘণ্টায় ৩২০ মেট্রিক টন জ্বালানি পাঠানোর সক্ষমতা থাকলেও প্রাথমিক পর্যায়ে ঘণ্টায় ২৬০-২৮০ টন পাঠানো হয়েছে। পদ্মা, মেঘনার পর পাইপ লাইনে তেল যায় যমুনার। পাইপলাইনে তেল গেছে কুমিল্লার ডিপোতেও।
পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসি (পিটিসিপিএলসি) ও প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা এই জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি তদারকি করেছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের সক্ষমতাসহ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত, সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়, পরিবেশ সুরক্ষা, ঝুঁকিমুক্তভাবে দ্রুততম সময়ে তেল পরিবহনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত আড়াইশ’ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়। বিপিসির এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ২৭ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা হবে। এতে বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।