অনিন্দ্য সুন্দর পার্বত্য জেলা রাঙামাটির সিম্বল ‘ঝুলন্ত সেতু’। রূপ, বৈচিত্র্যে ভরপুর পার্বত্য জেলাটিকে তৎকালীন সরকার পর্যটন শহর হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
সেতুটি নির্মাণের চার দশকেরও বেশি সময় পার হলেও এখনো দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এতটুকু আকর্ষণ কমেনি। এ সেতুটি দেখতে বছরে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে পার্বত্য এ জনপদে। সেতুটি যিনি একবার দেখেছেন, সেতুর ওপর হেঁটেছেন তিনি বারবার এখানে ছুটে এসেছেন। বলা যায় সেতুর প্রেমের মায়ায় নিজেকে জড়িয়েছেন।
বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে পর্যটকরা নিজেদের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজের, প্রিয়জন-স্বজনদের ছবি প্রিয় মোবাইল ফোনে ধারণ বা সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ছবিগুলো পোস্ট করছে। অনেকে আবার ঝুলন্ত সেতুর ভিডিও ধারণ করে ব্লগিং কিংবা ইউটিউবে আপলোড করেও পয়সা তুলছেন ঘরে।
যে সব পর্যটক রাঙামাটিতে আসেন তারা আগেই ছুটে যান ‘ঝুলন্ত সেতু’ এক পলক, এক নজরে দেখতে। রাঙামাটিতে বেড়াতে আসবেন আর ঝুলন্ত সেতু দেখা হবে না তাহলে তার ভ্রমণটা বৃথা গেল এমন ধারণা পর্যটকদের।
যে মায়াবী ‘ঝুলন্ত সেতু’ নিয়ে পর্যটকদের মাঝে এত শত আলোচনা, আকর্ষণ, সেই সেতুর উন্নয়ন নিয়ে ভাবছে না খোদ পর্যটন করপোরেশন।
ভরা বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি যখন নবরূপে ধরা দেয় ঠিক সেই সময়ে ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের অথৈ জলে হাবুডুবু খায়। যে কারণে পর্যটকরা বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির জল-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ এবং স্মৃতি ধরে রাখতে পারলেও শেষ বেলায় ঝুলন্ত সেতু দেখার অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয় তাদের।
ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়ার মূল কারণ হলো কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং। বেশ কয়েক দশক ধরে বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে পলিমাটি এসে কাপ্তাই হ্রদে পড়ে। যে কারণে কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে পড়েছে। এক দশক ধরে কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং নিয়ে আলোচনা করা হলেও সেই আলোচনা ফাইল বন্দি রয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে সেতুটি সংস্কার করার ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আওয়াজ উঠেছিল। তবে সেই আওয়াজও বন্ধ হয়ে গেছে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝুলন্ত সেতুটি একটু উঁচু করে তৈরি করলে হ্রদের পানিতে ডুববে না। সংস্কারের বাজেটও এত লাগবে না।