দেশে ভালো ফলন হওয়ায় চলতি মৌসুমে আমদানি করতে হয়নি পেঁয়াজ। দামও ছিল মোটামুটি হাতের নাগালে। গত ১৫ দিনে হঠাৎ করে কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম বাড়ায় ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফলন বেশি হয় এমন জেলাগুলোর মোকাম থেকে সরবরাহ করে সারাদেশের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এতে মৌসুম শেষের অজুহাতে মোকামগুলোতে পেঁয়াজ কমে আসার সুযোগে দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী চক্র।
ভোগ্যপণ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে আকারভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা করে বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের আড়তদার ব্যবসায়ীদের দাবি, মৌসুম শেষে পেঁয়াজ কমে আসায় মোকাম মালিকরাই সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের সোমবারের (১১ আগস্ট) প্রতিবেদনে বলছে, ঢাকা মহানগরীর খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ১ আগস্ট খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। টিসিবির প্রতিবেদন বলছে, মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭২ টাকা থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে রাজবাড়ি, পাবনা, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ার মোকাম থেকে সারাদেশে পেঁয়াজ যাচ্ছে। খাতুনগঞ্জেও আসছে।
দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর দেশি পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রিত হতো। খাতুনগঞ্জের মেসার্স জামেনা ট্রেডিংয়ের পরিচালক মো. আজগর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার তো দেশি পেঁয়াজে সারা বছর যাচ্ছে। মৌসুম শেষের দিকে হলেও মোকামে এখন পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। মূলত সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতেও পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে থাকতে পারে। তবে দাম বাড়ার কারণে ভোক্তাপর্যায়ে পেঁয়াজের ব্যবহার কিছুটা কমবে। এতে দাম নিয়ন্ত্রিত থাকার কথা। তবু দাম কিছু বাড়লেও দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভর হওয়া প্রয়োজন। এতে সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনে আগ্রহী হবেন দেশের কৃষক। তখন অতিরিক্ত দাম নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।’
এদিকে গত বছরের এই সময়ে দেশে পেঁয়াজের দাম আরও বেশি ছিল। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড ও মিশর থেকে দেশে পেঁয়াজ আসা শুরু করলে খাতুনগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসে।