সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও শেষ ঘণ্টায় মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। এত আবারও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সূচকের পতন হলেও ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে দিনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টা এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। এতে পতন কেটে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার স্বপ্ন দেখতে থাকেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ায়। সেই চাপ সামাল দিতে পারেনি বাজার। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২২টির। আর ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবসের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ২১৯ পয়েন্ট। এর আগে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪ হাজার ৬৭৭ পয়েন্ট থেকে দফায় দফায় বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে ওঠে। ২৮ কার্যদিবসে এই উত্থান হয়। অর্থাৎ ২৮ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৮৫৯ পয়েন্ট।
এদিকে অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক মঙ্গলবার ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫১ পয়েন্টে নেমে গেছে।
মূল্যসূচকের পতন হলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬৬ কোটি ৫১ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬১০ কোটি ৮৬ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, মালেক স্পিনিং, হাক্কানী পাল্প, সিটি ব্যাংক, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, সোনালী পেপার এবং বিচ হ্যাচারি।