বাংলাদেশের অর্থনীতি গত এক বছরে খাদের কিনারা থেকে আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) ঘুরে এখন হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে সরকারের এক বছরের অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে আইসিইউ হয়ে এখন কেবিনে ফিরছে, এটি কবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখনও কেবিনে ফেরার মতো অবস্থায় নেই। আর গরিব দেশের অর্থনীতি কেবিনে ফিরবে না। পেয়িং বেড বা ওয়ার্ডে ফিরবে, তারপর বাড়ি ফিরবে।’
ড. সালেহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থনীতির কিছু বেসিক সংস্কার করব। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, তাই জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা স্বাভাবিক সংস্কার চালাতে পারব। রাজনীতিবিদদের আমরা বলেছি, এসব কাজে যদি তোমরা বাধা দাও, তাহলে এসব ঝামেলা তোমাদের সরকারের উপর পড়বে।’
অর্থ উপদেষ্টা জানান, বেসরকারিখাতের আস্থা ফেরানো এখনও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ফেব্রুয়ারিতে নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর তারা কোন ধরণের পলিসি গ্রহণ করে, তার উপর প্রাইভেট সেক্টরের কনফিডেন্স ফেরার বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘তবে প্রাইভেট সেক্টরের কনফিডেন্স ফেরানো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সারা পৃথিবীটাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প ইজ দ্য বিগেস্ট প্লেয়ার অব দ্য আনসারটেনিটি।’
‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন সরকার আসবে। তারা কি পলিসি নেবে, সেটাও ব্যবসায়ীদের কাছে একটা অনিশ্চিত। তবে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ইস্যুতে ২-৩ মাস আগেও বেশ হইচই করতো, যা এখন কমে গেছে। ১০০% সারটেইন পৃথিবীর কোন ব্যবসাতেই নেই’- যোগ করেন অর্থ উপদেষ্টা।
ব্যাংকখাতে এখনও রেগুলেটরি ক্রাইসিস আছে স্বীকার করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক ব্যাংক এখনও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। আমানতকারীদের ফেরত দেওয়ার জন্য একটি ব্যাংককে অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে, তারপরও ব্যাংকটি গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। সেই টাকা কোথায় গেল, সেটিও আমরা দেখব।’
তিনি বলেন, ‘এক বছর পেঁছনে ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, এখনকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক, স্থিতিশীল। মূল্যস্ফীতি কমেছে, ব্যাংকখাতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট, এক্সচেঞ্জ রেটে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে।’
‘গত এক বছরে আমরা সব করে ফেলেছি, তা নয়। তবে আমরা সঠিক পথেই যাত্রা শুরু করেছি। আরও দ্রুত গেলে ভালো হতো। আমাদের কাজে কোন ভুল-ত্রুটিও থাকতে পারে’- যোগ করেন অর্থ উপদেষ্টা।