গত তিন অর্থবছর ধরে বাজার স্থিতিশীল রাখতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত তিন অর্থবছর ধরে বাজার স্থিতিশীল রাখতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এসে বিক্রি না করে উল্টো বাজার থেকে পাঁচ দফায় মোট ৬৩ কোটি ডলার কেনা হয়েছে। সবশেষ গতকালও ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
মূলত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটি একাধিক মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিতে (মাল্টিপল প্রাইস অকশন) গতকাল ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে। প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত। এর মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার কেনা হয়েছে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সায় আর ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়েছে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায়।
এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট রিজার্ভ (গ্রস) দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে, রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গত ১৩ জুলাই প্রথম দফায় ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে কেনা হয় ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। তৃতীয় দফায় ২৩ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১ কোটি ডলার কেনে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে।
গত বৃহস্পতিবার চতুর্থ দফায় কেনা হয় ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। প্রতি ডলারের দাম পড়ে ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে শুরু করে ৫০ পয়সা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারে দর অস্থিতিশীল হতে দেবে না। দাম অনেক বেড়ে যাওয়া যেমন ভালো নয়, আবার দাম কমে যাওয়াও অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দেশে খাদ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। বিদেশী যেসব দায়দেনা বকেয়া হয়ে গিয়েছিল, সেগুলোও পরিশোধ করা হয়েছে। এ কারণে সহসা ডলারের বড় কোনো চাহিদা তৈরি হবে না। বাড়তি ডলার বাজার থেকে কিনে নেয়ায় নতুন অর্থবছরে রিজার্ভ অনেক সমৃদ্ধ হবে।’ জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে দেশে বিনিয়োগ ও ডলারের চাহিদা বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।