ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড তুস্ক। শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। একই সময়ে হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তুস্ক জানান, তিনি সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলেনস্কি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তুস্ক বলেন, কিছু সংকেত থেকে মনে হচ্ছে পুরোপুরি বন্ধ না হলেও যুদ্ধের একটি সাময়িক স্থিতাবস্থা খুবই নিকটে ।
তুস্ক জানান, জেলেনস্কি খুব সতর্ক কিন্তু আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছেন। ইউক্রেন চায় পোল্যান্ডসহ ইউরোপের দেশগুলো যুদ্ধবিরতি ও পরবর্তী শান্তি চুক্তির পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখুক।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভাব্য চুক্তিতে পুতিনের কিছু ভূখণ্ডগত দখল স্বীকৃতি পেতে পারে এবং খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে যুদ্ধরেখা স্থির হয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে, যাতে রাশিয়া আক্রমণ থামাবে বিনিময়ে কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার শর্তে যা ইউক্রেনের রাজনীতিতে বিতর্কিত বিষয়।
জেলেনস্কি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক আগামী সপ্তাহের শেষে হতে পারে। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে সুইজারল্যান্ড, রোম, হাঙ্গেরি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম এসেছে। তবে সুইজারল্যান্ড ও ইতালি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য, যেখানে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। হাঙ্গেরি এ বছর আদালত থেকে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, পুতিনের আগে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করার দরকার নেই। পুতিন জানিয়েছেন, তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত নন, যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক সম্ভব হলেও শর্ত তৈরি করতে হবে, যা এখনো হয়নি। মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ তিন পক্ষের বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু ক্রেমলিন তা উপেক্ষা করে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিয়েছে।
সম্ভাব্য বৈঠকের স্থান নির্ধারণ হয়নি, তবে পুতিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইকে সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত ৪৮ ঘণ্টায় হোয়াইট হাউস বৈঠক নিয়ে ভিন্নমুখী বক্তব্য দিয়েছে।
গত মাসে ট্রাম্প পুতিনকে যুদ্ধবিরতির আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, না হলে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। যদিও একই সময়ে তিনি ভারতের ওপর রুশ তেল কেনায় শুল্ক বাড়িয়েছেন।
যুদ্ধের তৃতীয় বছরে পুতিনের ধারাবাহিক হামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “পুতিন দিনে ভালো কথা বলে, রাতে বোমা ফেলে।”